ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের শুরুতেই আমেরিকা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাশিয়ার ওপর। তারপর রাশিয়া-ইউক্রেন দু'পক্ষের মধ্যে বেশ কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে। যদিও এখনও যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ নেই। রাষ্ট্রসংঘে এই যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটাভুটিতে ভারত, চীন ভোটদানে বিরত থেকেছে। মস্কোর সাথে তাদের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। সেটাও স্পষ্ট জানিয়েছে বেজিং।
এদিকে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়াকে সাহায্য করলে ফল ভুগতে হবে বলে চীনকে হুঁশিয়ারি দিলেন। এই বিষয়ে আলোচনা করতে আজ রোমে চীনা প্রতিনিধি ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে বৈঠকে করবেন তিনি।
দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ চলছে প্রায় ১৯ দিন ধরে। কিন্তু যুদ্ধ বিরতির কোনও সম্ভাবনা এখনও মেলেনি। এহেন পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জব্দ করতে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান-সহ একাধিক দেশ রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে।
ইতিমধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেছে ওয়াশিংটন। রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়ায় ব্যাংকগুলি গোটা বিশ্বে আর কাজ করতে পারছে না। রাশিয়ার আমদানি-রফতানি ব্যাহত হচ্ছে। তার প্রভাব পড়েছে রুশ অর্থনীতিতে। এহেন পরিস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাশিয়াও। বেশ কয়েকটি সংস্থা রাশিয়ায় তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে।
একটি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ইউক্রেনে যুদ্ধ চালানোর জন্য মস্কো হাতিয়ার চেয়েছে বেজিংয়ের কাছে। একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কমাতে দ্বারস্থও হয়েছে। মাস্টার কার্ড ও ভিসার মতো আর্থিক লেনদেন সংস্থাগুলি রাশিয়ার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর চীনা সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে সেদেশে। একইসঙ্গে পণ্য আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রেও চীনের বাজার নিয়েও ভাবছে রাশিয়া।
তবে চীন সরাসরি মার্কিন হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া না জানালেও আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছে, তাঁরা পশ্চিমী দেশগুলির চাপের মুখে মাথা নোয়াতে প্রস্তুত নয়। চীনের মুখপাত্র লি কিকিয়াং বলেছেন – “ শুধামাত্র আলোচনার মাধ্যমেই এই যুদ্ধ থামতে পারে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হলে পুরো বিশ্বে তাঁর প্রভাব পড়বে। চীন সব সময় একটি স্বাধীন বিদেশনীতি নিয়ে চলে। তৃতীয় কোনও শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন