ইউনেস্কোর উচিত শুধু আফগানিস্তান নয়, পাকিস্তানকেও বহিষ্কার করা। কেউই ইউনেস্কোর সাহায্য পাওয়ার যোগ্য নয়। চীনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই তিনটি দেশেরই ইউনেস্কোর কার্যকরী পর্ষদে থাকা হাস্যকর, লিখেছেন মাইকেল রুবিন।
রুবিন ওয়াশিংটন এক্সামিনারে লিখেছেন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা করার থেকে ইউনেস্কোর দুর্নীতি একে ধ্বংসের অনুঘটক করেছে। আফগানিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সারা বিশ্বের উচিত তালিবানকে দায়ী করা।
আফগানিস্তানে তালিবানরা পরিকল্পিতভাবে সে দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে মুছে দিতে চায়। তারা হয়তো এটা করবে পাকিস্তানি আধিকারিকদের আগ্রহে, যারা পাশতুন জাতীয়তাবাদকে ভয় পায় এবং চায় বিভিন্ন আফগান সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার মুছে ফেলার পাশাপাশি ইতিহাসের শিকড়কে মুছে ফেলতে। আফগান ঐতিহ্য মুছে ফেলে, পাকিস্তান ভবিষ্যতে জমি দখলের যৌক্তিকতা প্রমাণ কর্যে পারে এবং রাষ্ট্র হিসেবে নিজের আত্মবিশ্বাসের অভাব দূর করতে পারেন, লিখেছেন রুবিন।
রুবিন বলেছেন, তালিবানরা একাই ইতিহাস এবং অতীতের বহুত্ববাদের অবশেষ মুছে ফেলতে চায় তা নয়। প্যালেস্তানীয়রা ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান নষ্ট করে দিয়েছে এবং আস্তাকুঁড়ে ফেলে দিয়েছে নিদর্শনগুলিকে।
১৯৪৯এর গোড়া থেকে কম্যুনিস্ট চীন পরিকল্পিতভাবে ৬০০০এর বেশি মঠ এবং তিব্বতের অনেক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমানে তারা একইভাবে উইঘুর ঐতিহ্য মুছে ফেলার পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে।
রুবিনের মতে চীনও ইতিহাস নতুন করে লিখতে চায়।মুছে ফেলতে চায় দেশের বৈচিত্র্য। যে দেশ একসময় হানেরা দখল করেছিল নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে।
তালিবানরা শতাব্দীপ্রাচীন দুর্গকে বলি দিয়েছে বুলডোজারে। যে দুর্গের প্রহরীরা চতুর্দশ শতাব্দীতে জখম করেছিল তৈমুরকে। তারপর থেকেই তৈমুর লঙ্গ নাম হয়েছিল।
যতই বিশেষ দূত জালমে খালিজাদ আশ্বস্ত করুক তালিবানদের পরিবর্তন হয়েছে বলে কিন্তু তাদের কোন পরিবর্তনই হয়নি। সেই ২০০১-এর মতোই আছে, যখন ডিনামাইট দিয়ে ইউনেস্কোর ঐতিহ্যের তালিকায় থাকা বামিয়ানে ষষ্ঠ শতাব্দীর বুদ্ধের মূর্তি ধ্বংস করে দিয়েছিল তারা। রুবিনের অভিযোগ ইউনেস্কো সমস্যার সমাধানের চেয়ে বাড়িয়ে তুলেছে।
২০০৫এ ইউনেস্কোর আবেদনে কান না দিয়ে আজারবাইজান জুল্ফা সমাধি এবং এবং তার অভিনব শতাব্দীপ্রাচীন খচকরের সংগ্রহ ধ্বংস করে দেয়। আজারবাইজানকে শাস্তি না দিয়ে ইউনেস্কো আজারবাইজানি একনায়ক ইলহাম আলিয়েভকে পুরস্কৃত করে তার বউকে শুভেচ্ছা দূত বানিয়ে। এরপরে আর আশ্চর্যের কি যে আলিয়েভ এখন নাগোমো-কারাবাখের আর্মেনিয় ঐতিহ্য মুছে ফেলছে। যদিও ওই স্থানটির নিয়ন্ত্রণ ঘিরে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে সংঘাতের এখনও মীমাংসা হয়নি।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন