গত সপ্তাহেই চাল রপ্তানির উপর বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ভারত। পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বাসমতী নয় এমন সাদা চালের রপ্তানি। ভারতের এই সিদ্ধান্ত এবার বিশ্বের খাদ্য বাজারে সরাসরি প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই চাল মজুত করা, অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেনাকাটায় ব্যাপক আতঙ্ক শুরু হয়েছে আমেরিকার বাজারে। স্বাভাবিকভাবেই বেশি সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার প্রবাসী ভারতীয়রা। কারণ, ভারতীয় খাবারের অন্যতম প্রধান উপাদানই হল চাল।
গত সপ্তাহেই বাসমতী নয় এমন সাদা চালের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত সরকার। চলতি বছরে একদিকে অস্বাভাবিক খরা এবং অন্যদিকে লাগামছাড়া বৃষ্টিতে চালের ফলনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর তাই দেশের বাজারে চাহিদা অনুযায়ী চালের জোগান বজায় রাখতে এবং মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে চালের দাম রাখার জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য চালের রপ্তানিতে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা তখনই জানিয়েছিলেন, ভারত বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ। তাই ভারত বিদেশের বাজার চাল পাঠানো বন্ধ করে দিলে গোটা বিশ্বের খাদ্য বাজারে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
বিশেষজ্ঞদের সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি করেই এবার চালের বাজারে সবার প্রথম আলোড়ন দেখা গেল সুদূর আমেরিকায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে চাল কেনা নিয়ে শুরু হয়েছে আতঙ্ক। করোনা অতিমারীর সময় যেমন কাঁচামাল ঘরে মজুত করে রাখার হুজুগ উঠেছিল, তেমনই এবার আমেরিকার প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে ঘরে চাল মজুত করে রাখার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যার ফলে বাজারে ক্রমশই কমছে চালের জোগান, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে কীভাবে আমেরিকার বিভিন্ন শহরের ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলিতে চালের জন্য প্রবাসী ভারতীয়দের লাইন পড়েছে, কীভাবে চালের শেষ প্যাকেটটির দখলে নেওয়ার জন্য হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ছেন খদ্দেররা।
ওয়াশিংটনের বাসিন্দা অরুণা যেমন এই নিয়ে জানিয়েছেন, “আমি সকাল ৯টার সময় এক প্যাকেট চাল কেনার জন্য বের হই। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত প্রায় ১০টা দোকান ঘোরার পর প্রায় তিনগুণ বেশি দাম দিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি চাল কিনতে পারলাম।”
তাঁর মতোই অবস্থা ওয়াশিংটনের গোটা প্রবাসী ভারতীয় সম্প্রদায়ের। শুধু ওয়াশিংটন নয়, চাল কেনা নিয়ে এরকম কাড়াকাড়ি পড়ে গিয়েছে গোটা মার্কিন মুলুকেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাজার শেষবার এরকম তোলপাড় হয়েছিল ২০২০ সালের করোনা অতিমারী এবং গত বছরের রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সময়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন