প্রযুক্তিনির্ভর কোম্পানিকে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম ব্যাঙ্ক হল- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক’ (Silicon Valley Bank)। বিশ্বজুড়ে মন্দার প্রভাবে এবার বন্ধ হয়ে গেল সেই ব্যাঙ্কও। ঠিক যেভাবে, ২০০৮ সালে ইউরোপে পতন হয়েছিল লেম্যান ব্রাদার্স (Lehman Brothers) ব্যাঙ্ক।
সূত্রের খবর, ১০ মার্চ, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক বন্ধ ঘোষণা করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যাঙ্ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ব্যাঙ্কের যাবতীয় অ্যাসেট। সেইসঙ্গে, ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের পুঁজির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন (FDIC)-কে।
১০ মার্চ, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক বন্ধের সময় মোট গ্রাহক আমানত ছিল ১৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই অর্থ এখন নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ফেডারেল ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন (FDIC)।
জানা যাচ্ছে, সিলিকন ভ্যালির প্রধান কার্যালয় এবং সকল শাখা ১৩ মার্চ পুনরায় খুলবে। মার্কিন ফেডারেল ডিপোজিট ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন জানিয়েছে, সকল আমানতকারী সোমবার সকালের পর সম্পূর্ণ অ্যাক্সেস পাবেন।
সূত্রের খবর, FDIC একটি নতুন ব্যাঙ্ক তৈরি করেছে। নাম দেওয়া হয়েছে- ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অফ সান্তা ক্লারার (the National Bank of Santa Clara)। এই বাঙ্কই এখন সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের সমস্ত সম্পদ নিজেদের দখলে নেবে।
কেন এই পতন?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম বৃহত্তম ব্যাঙ্ক হল- সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ শতাংশেরও বেশি প্রযুক্তি সংস্থাকে তহবিল জুগিয়েছে (ঋণ দিয়েছে) দীর্ঘ ৪০ বছরের পুরনো এই ব্যাঙ্ক।
জানা যাচ্ছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক তাঁদের সিংহভাগ অর্থ মার্কিন বন্ডে বিনিয়োগ করেছে। আর, মুদ্রাস্ফীতির হার কমাতে গত ১৮ মাসে সুদের হার বাড়িয়েছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ। এর ফলে, বন্ডের মান কমে গেছে। সেই কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এই ব্যাঙ্ক।
অন্যদিকে, ঝুকিতে থাকে প্রযুক্তি সংস্থাগুলির প্রতি আগ্রহ কমছে বিনিয়োগকারীদের। বেশি সুদের হারের কারণে একাধিক প্রযুক্তি সংস্থার আইপিওর বাজার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ কারণে তহবিল সংকট বেড়েছে। আর, নগদ সঙ্কট মেটাতে টাকা তুলতে শুরু করেন সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের গ্রাহকরা। এর জেরে সংকটে পরে যায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক।
এছাড়া, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের শেয়ারের মূল্য পতনও এই সংকটের অন্যতম কারণ। জানা যাচ্ছে, সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্কের শেয়ার প্রায় ৬০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন