সহজতর প্রযুক্তি এবং কম দাম। রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনার জন্য নয়া দিল্লির হাতে এই দুটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এই অস্ত্র কেনা ইস্যুতে এর আগেও ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিল হোয়াইট হাউস। মস্কোর থেকে অস্ত্র না কিনলে ভারতকে অস্ত্র পাঠাবে আমেরিকা। এরকম সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াশিংটন। কিন্তু ভারত নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিল।
২০১৯ সালের শুরুর দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন রাশিয়া থেকে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনা নিয়ে তৎপর হয় নয়াদিল্লি। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, মস্কোর সঙ্গে এস-৪০০ কেনার চুক্তি বাতিল করলে ভারতকে ‘টার্মিনাল হাই অলটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স’ (থাড) এবং পেট্রিয়ট-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী বিক্রি করবে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি ভারত।
প্রসঙ্গত, একটা সময় ছিল যখন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার ৮০ শতাংশেরও বেশি অস্ত্র ও সরঞ্জাম সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আসত। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রাশিয়ার থেকেও সমানে অস্ত্র আমদানি করে চলেছে ভারত।
আমেরিকা থেকে ভারী সামরিক পরিবহণ বিমান সি-১৭ গ্লোবমাস্টার এবং সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস, এম-৭৭৭ হাউইৎজার কেনা হয়েছে। কিন্ত সামগ্রিক ভাবে আমেরিকার তুলনায় রাশিয়া থেকে অস্ত্র সরবরাহে পাল্লা ভারী বেশি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, ভারতের এস-৪০০ কেনার সিদ্ধান্তে অটল থাকার অন্যতম কারণ একদিকে ছিল সহজতর প্রযুক্তি এবং কম দাম। আমেরিকার একটি রিপোর্টে পশ্চিমী অস্ত্রের প্রতি ভারতের ‘অনীহার কারণ’ হিসেবে এই যুক্তি দেখানো হয়। ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত যাতে রাশিয়া থেকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম না-কেনে, তার জন্য নয়াদিল্লিকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ‘বিকল্পের’ মূল্য যেহেতু অনেকটাই বেশি, তাই তা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতের পক্ষ থেকেও তা আমেরিকাকে জানানো হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
সম্প্রতি, ওয়াশিংটন দাবি করে, মস্কোর সঙ্গ ছাড়ুক ভারত। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি করা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এই ব্যাপারে ভারত নিজের অবস্থান জানালেও মার্কিন ফরমান না মানলে ভবিষ্যতে সমস্যা বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিতও দিয়েছে হোয়াইট হাউস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন