কেন্দ্রের নয়া বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে দেশজুড়ে প্রতিবাদে সামিল ১০ লক্ষ বিদ্যুৎ কর্মী

সংসদে সদ্য পেশ হওয়া বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার, প্রায় ১০ লক্ষের বেশি বিদ্যুৎ কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ার সকাল ৮টা থেকে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে শামিল হন।
বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সিটুর
বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ সিটুর ছবি সৌজন্যে সিটু ফেসবুক পেজ
Published on

বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল, ২০২২ লোকসভায় পেশ হতেই দেশজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিল কৃষক-শ্রমিক-বিদ্যুৎ কর্মীরা সহ সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ।

সংসদে সদ্য পেশ হওয়া বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার, গোটা দেশের প্রায় ১০ লক্ষের বেশি বিদ্যুৎ কর্মী এবং ইঞ্জিনিয়ার সকাল ৮টা থেকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হন। পাশাপাশি সিআইটিইউ, সারা ভারত কিষাণ সভা এবং সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের ডাকে এদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার কর্মী প্রতিবাদে অংশ নেন।

তাঁদের মূল অভিযোগ, সরকারের প্রস্তাবিত এই বিল আইনে পরিণত হলে সমূহ সর্বনাশ হবে বিদ্যুৎ কর্মী এবং সাধারণ মানুষের। মুনাফা বাড়বে কেবল কর্পোরেট সংস্থার। সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম হবে আকাশ ছোঁয়া। কৃষক, শ্রমিক, গরীব মানুষদের জন্য ভর্তুকি ব্যবস্থাও তুলে দিতে পারে মোদী সরকার।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বিদ্যুৎ কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারদের পক্ষ থেকে মোদী সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, সংসদে যদি জোর করে বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল পাশ করানো হয় তৎক্ষণাৎ ধর্মঘটে চলে যাবেন বিদ্যুৎ কর্মী-ইঞ্জিনিয়াররা। পাশাপাশি সিআইটিইউ, সারা ভারত কিষাণ সভা এবং সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের তরফে সারা দেশজুড়ে প্রতিবাদ সংঘটিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।

সোমবার দেশজোড়া প্রতিবাদের সংহতিতে দিল্লির যন্তর মন্তরে এক প্রতীকী প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়। সভা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সিআইটিইউ সাধারণ সম্পাদক তপন সেন। সভায় বক্তব্য রাখেন এআইকেএস সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা, খেতমজুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বি ভেঙ্কট এবং সিআইটিইউ দিল্লির রাজ্য সভাপতি বীরান্দর গওর। ওই প্রতিবাদ সভায় বিদ্যুৎ সংশোধনী বিলের প্রতিলিপি পোড়ানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সভায় বক্তারা জানান, সংসদে বিল পেশ হলেও কৃষক-শ্রমিকদের চাপে পড়েই সেটা স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি অব ইলেক্টিসিটি এমপ্লয়িজ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, গোটা দেশে প্রায় ৯৬০৮টি জায়গায় সোমবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্মীরা। তার মধ্যে রয়েছে হায়দ্রাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, তিরুবনন্তপুরম, বিজয়ওয়াদা, লক্ষনৌ, পাতিয়ালা, দেরাদুন, শিমলা, জম্মু, শ্রীনগর, চণ্ডীগড়, মুম্বাই, পুনে, কলকাতা, বদোদরা, রায়পুর, জব্বলপুর, ভোপাল, জয়পুর, পাটনা, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, গুয়াহাটি এবং শিলং।

কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি এই বিবৃতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। ইউনিয়নের কর্মীদের এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছে। তাতেও শামিল হতে বলা হয়েছে ট্রেড ইউনিয়নের কর্মীদের।

কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিদ্যুৎক্ষেত্রকে কর্পোরেটদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। এই অভিযোগে, গত ২ আগস্ট নয়াদিল্লির কন্সটিটিউশন ক্লাবে ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি অব ইলেক্টিসিটি এমপ্লয়িজ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের ডাকে একটি কনভেনশন হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংসদরা। সিপিআই(এম) সাংসদ এলারাম করিম, আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিং, ডিএমকে সাংসদ এম সম্মুগম, সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বম সহ আরও অনেকেই বিদ্যুৎ কর্মীদের আন্দোলনকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in