স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বন্ধ ছিল সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট। যোগীরাজ্যে সেই সুযোগেই কাজ সারল রেল কর্তৃপক্ষের বুলডোজার। ‘বেআইনি নির্মাণ উচ্ছেদ’-এর নামে মথুরায় ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হল শতাধিক ঘরবাড়ি। ক্ষতিগ্রস্তরা বুধবার এই বিষয়ে বিচার চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। সেখানে তিন বিচারপতির বেঞ্চ আগামী ১০ দিনের জন্য ওই উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার-সহ বেশ কয়েকটি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নোটিশ পাঠিয়েছে।
কৃষ্ণ জন্মভূমি মথুরায় মোটামুটি ১৮০০ সাল থেকেই রয়েছে ১৫০-এরও বেশি বাড়ির একটি জনবসতি। রেলের তরফ থেকে আগেই ওই জনবসতির বাসিন্দাদের উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। ওখানকার বাসিন্দারা এই নিয়ে কিছুদিন আগেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সোমবার প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তাঁদের এলাহাবাদ হাইকোর্টে যেতে বলেন। কিন্তু অভিযোগকারীদের আইনজীবী ইয়াকুব শাহ জানিয়েছেন, ওই হাইকোর্টে ইতিমধ্যেই এই উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশের একটি মামলা শুনানির অপেক্ষায় ঝুলে রয়েছে।
মঙ্গলবার যখন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সমস্ত আদালত বন্ধ, তখনই রেলের বুলডোজার নির্বিচারে গুড়িয়ে দিল ওই জনবসতির ১০০টিরও বেশি বাড়ি। এখনও ৭০-৮০টি বাড়ি বাকি রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আইনজীবী ইয়াকুব শাহ বুধবার এই নিয়ে জানিয়েছেন, “এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। কাল হাইকোর্টও বন্ধ ছিল। সেই সুযোগেই সব বাড়ি ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।” বুধবার এই মামলা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তরা ফের সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হলে বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস, এসভিএন ভাট্টি এবং সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ আগামী ১০ দিনের জন্য ওই উচ্ছেদ অভিযানে স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, “আগামী ১০ দিনের জন্য ওখানে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হবে। শীর্ষ আদালত আবার সাতদিন পর এই মামলা শুনবে।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই সুপ্রিম কোর্টে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ডি.ওয়াই চন্দ্রচূড় এই বুলডোজার নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান ও নির্বিচারে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, “কাউকে একতরফাভাবে গ্রেফতার করা হলে, হুমকি দিয়ে গায়ের জোরে ঘরবাড়ি বা অন্যকিছু ভেঙে ফেলা হলে সুপ্রিম কোর্টের কাছে এর সুরাহা ও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাবে। আমার মতে, নাগরিকদের কাছে ন্যায়বিচারের সুযোগ পৌঁছে দেওয়াই আমাদের ব্যবস্থার প্রকৃত শক্তি।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন