কন্যাভ্রূণ হত্যা এবং মহিলাদের শিক্ষার উন্নতির স্বার্থে কেন্দ্র সরকার ২০১৫ সালে চালু করেছিল ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পটি। বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে এই প্রকল্পের বিজ্ঞাপনের জন্য, বরাদ্দ অর্থের সিংহভাগই। আর এই প্রকল্পেরই নাম লিখতে গিয়ে বানান ভুল করলেন খোদ কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী সাবিত্রী ঠাকুর। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই সমালোচনা শুরু করেছেন বিরোধীরা। বাক্যবাণ ধেয়ে আসছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশের ধর কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রতীকে ভোটে জিতেছেন সাবিত্রী। মোদীর তৃতীয় মন্ত্রিসভায় হয়েছেন নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রীও। বুধবার মধ্যপ্রদেশের ধর জেলায় একটি স্কুলে প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রিত ছিলেন সাবিত্রী ঠাকুর।
ওই বিদ্যালয়ে সরকারের ‘স্কুল চলো অভিযান' কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানেই একটি সাদা বোর্ডে হিন্দিতে 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও' স্লোগান লিখতে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেখানে 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও'-এর বদলে মন্ত্রী লেখেন 'বেটি পড়াও বাঁচাও।' স্লোগানের নীচে স্বাক্ষরও করেন তিনি। এরপর চলে যান তিনি। ভুল সংশোধনের চেষ্টাও করেননি তিনি। এই সম্পূর্ণ ঘটনার ভিডিও করা হয়। সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই মন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
জানা যায়, সদ্য সমাপ্ত লোকসভায় মনোনয়ন পত্রে তিনি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে ২০১৮ সালে উর্দু শিক্ষা বোর্ড থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পাশ বলে উল্লেখ করেছেন। এই ভিডিও ভাইরাল হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে একজন দ্বাদশ শ্রেণী পাশ কীভাবে মন্ত্রী হয়। যদিও এনিয়ে এখনও মন্ত্রীর তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এদিনে কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও সাবিত্রী ঠাকুরের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। দলের সিনিয়র নেতা কে কে মিশ্র এই ভুলকে ‘গণতন্ত্রের দুর্ভাগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। মন্ত্রিত্ব চালানোর জন্য এই জাতীয় নেতাদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।
এনিয়ে কংগ্রেস সাংসদ জিতু পাটওয়ারি এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, “একদিকে দেশের নাগরিকদের স্বাক্ষর বলে দাবি করা হচ্ছে, অন্যদিকে দায়িত্বশীলদের মধ্যে স্বাক্ষরতার অভাব রয়েছে। তাহলে সত্যটা কী? এটা গোটা সিস্টেমের সমস্যা, কোনো ব্যক্তির নয়।“
অন্যদিকে, সাবিত্রী ঠাকুরের সমর্থনে ধরের বিজেপি সভাপতি মনোজ সোমানি বলেছেন, ‘স্কুল চলো অভিযান’ চলাকালীন মন্ত্রী ভুলবশত এটা লিখে ফেলেছেন। এটা নিয়ে কংগ্রেসের সমালোচনা ‘তুচ্ছ এবং আদিবাসী বিরোধী চিন্তাভাবনা’কে দেখায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন