পূর্ত দপ্তর থেকে 'ফিটনেস সার্টিফিকেট' না নিয়েই খুলে ফেলা হয়েছিল শতাব্দী প্রাচীন সেতুটি। ঝুলন্ত সেতু ভেঙে প্রায় ১৪১ জনের মৃত্যুর পর এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এলো। এই ঘটনায় আহতও হয়েছেন বহু মানুষ। ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধার কাজ এখনও চালু রয়েছে কারণ প্রায় ২০০ জন এখনও নিখোঁজ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রবিবার সন্ধ্যায় ৫০০ জনের বেশি লোক নিয়ে গুজরাটের মোরবি জেলায় মাচ্চু নদীর উপর ভেঙে পড়ে ঝুলন্ত সেতুটি। ছট পুজোর উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছিল সেইসময় নদীঘাটে। ১৪৩ বছরের পুরনো সংকীর্ণ সেতুটিতে সংস্কারের কাজ চলছিল। ৫ দিন আগেই তা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটার পর প্রশাসন দাবি করছে, সেতু খোলার আগে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনও ফিটনেস সার্টিফিকেট নেওয়া হয়নি।
ওরেভা (Oreva) নামের একটি বেসরকারি কোম্পানি সেতু সংস্কারের জন্য সরকারের কাছ থেকে টেন্ডার পেয়েছিল। গত ৭ মাস ধরে সংস্কারের কাজ চলছিল। ২৬ অক্টোবর খুলে দেওয়া হয় সেতুটি।
মোরবি মিউনিসিপ্যাল এজেন্সির প্রধান সন্দীপ সিং জালা জানিয়েছেন, "সেতুটি খোলার আগে ওরেভা কোম্পানি প্রশাসনের কাছ থেকে ফিটনেস সার্টিফিকেট নেয়নি। এটি একটি সরকারি টেন্ডার ছিল। সেতুটি খোলার আগে এটির সংস্কারের বিষদ বিবরণ সরকারকে দেওয়ার কথা ছিল ওরেভা কোম্পানির। এরপর মান যাচাই করে সেতুটি খোলার কথা ছিল। এগুলো কিছুই করা হয়নি। সরকার এই বিষয়ে সচেতন ছিল না। তারই পরিণাম এই মর্মান্তিক ঘটনা।"
একই দাবি আনান্য বাসিন্দাদেরও।
সেতু ভেঙে পড়ার আগের বেশ কিছু মুহূর্তের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে সেতুটির ওপর ভিড় থিকথিক করছে। সেতুর উপর দাঁড়িয়ে লাফালাফি করছেন, দৌড়াচ্ছেন অনেকে। এরপরই নদীর উপর হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
প্রধানমন্ত্রীর গুজরাট সফর চলাকালীন এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা।
এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০,০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন কেন্দ্র সরকার। গুজরাট সরকারের তরফ থেকে মৃতদের ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন