ফের প্রবল বর্ষণে মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে হিমাচল প্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। একটি শিব মন্দিরে ধস নামায় চাপা পড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে ৭ জনের প্রাণ গেছে। আরও অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। মন্দিরের ধ্বংসস্তুপের নিচে অনেকের আটকে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রবিবার রাতে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে হিমাচল প্রদেশের সোলান জেলার বেশকিছু অংশ ভেসে যায়। জাতীয় সড়ক বন্ধ রয়েছে। বহু জায়গায় ধসও নামে। সেই ধসেই চাপা পড়ে সাত জন প্রাণ হারায়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই সাত জনের মধ্যে ৪ নাবালক-নাবালিকাও রয়েছে। মৃতদের নাম হলো - নেহা (১২), রাহুল (১৪), গোলু (৮), রক্ষা (১২), কমল কিশোর (৩৫), হরনাম (৩৮) এবং হেমলতা (৩৪)। তাছাড়া কান্দাঘাট মহকুমার মামলিঘ গ্রাম থেকে ৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। যারা মেঘভাঙা বৃষ্টির কবলে পড়েছিলেন। একাধিক বাড়ি ভেসে গেছে।
আবার সিমলাতে একটি শিব মন্দিরে ব্যাপক ধস নামে। মন্দির চাপা পড়েন ১৬-২০ জন দর্শনার্থী। দ্রুত উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। আপাতত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
দুটি ঘটনাতেই শোক জ্ঞাপন করেছেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুকু। তিনি ট্যুইটে লেখেন, "শিমলা থেকে দুঃখজনক খবর পেয়েছি। সামার হিলে প্রচুর বৃষ্টির কারণে শিব মন্দির ভেঙে চাপা পড়েছেন অনেকেই। এখনও পর্যন্ত ৯ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সকলের আত্মার শান্তি কামনা করি।"
মেঘভাঙা বৃষ্টিতে মৃতদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'সোলান জেলার ধাওলা সাব-তহশিলের জাডন গ্রামে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ৭টি মূল্যবান প্রাণ আমরা হারিয়েছি। শোকাহত পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই। আমরাও আপনাদের কঠিন সময়ের অংশীদার।"
সমগ্র হিমাচল জুড়েই বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। বহু গ্রাম বন্যায় ভেসে গেছে। প্রায় ৮০০টি রাস্তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। এরই মধ্যে আবহাওয়া দফতরের রিপোর্টে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। রবিবার আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে, সোমবার কাংড়া, বিলাসপুর, সোলান, সিমলা, মান্ডি, ছাম্বা, হামিরপুর এবং কুলুতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে।
বন্যা ও ভূমিধসের জেরে হিমাচলের অর্থনীতিও ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে। রবিবার সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ব্যাপক বন্যার কারণে রাজ্যে ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। আধিকারিকরা আরও জানান, চলতি বছরের জুন মাস থেকে এখনও পর্যন্ত বন্যার জন্য ২৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। যার মধ্যে ৬৬ জন হরপা বান এবং ভূমিধসের কারণে বং ১৯১ জন পথ দুর্ঘটনা বা অন্যান্য কারণে মারা গেছেন। আংশিক ও সম্পূর্ণ মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। প্রচুর গবাদি পশুরও মৃত্যু হয়েছে বন্যার কারণে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন