ফের শিরোনামে কোটা। না, ঠিক কোটা নয়। শিরোনামে উঠে এলো রাজস্থানের কোটায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের মানসিক সুস্থতা। গত দু'দিনে কোটা শহরে পড়তে আসা দুই ছাত্রের আত্মহত্যা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলে।
আত্মঘাতী দুই ছাত্রই দুই থেকে আড়াই মাস আগে কোটা শহরে এসেছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। দুজনেই শহরের বিজ্ঞাননগর এলাকায় থাকার জন্য ভিন্ন ভিন্ন বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। দুজনের মধ্যে একজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা, মাত্র দু'মাস আগেই মেডিকেলের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা NEET-এর প্রস্তুতি নিতে কোটায় আসে। সোমবার তার ঘর থেকেই তার প্রাণহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অন্যজনের দেহ পাওয়া যায় মঙ্গলবার। দুই ছাত্রেরই পরিচয় নিয়ে বিশেষ কিছু জানায়নি পুলিশ। তবে পরপর দুদিনে দুই ছাত্রের আত্মহত্যাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিজ্ঞাননগর এলাকায়।
অন্যদিকে, বিহার থেকে কোটায় পড়াশোনা করতে আসা ১৭ বছর বয়সী এক ছাত্রকে শেষ মুহূর্তে আত্মহত্যা থেকে বিরত করে পুলিশ। মাত্র তিন মাস আগেই সে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এন্ট্রান্স পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে কোটায় এসে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল বলে জানা গিয়েছে। রবিবার সে ফোনে তার বাবা-মাকে একটি 'কঠিন পদক্ষেপ' নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। এরপরই ভয় পেয়ে তার বাবা শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সরকারি কাউন্সিলিং সার্ভিসে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে খবর পেয়ে পুলিশবাহিনী মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে তাকে রংবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পরদিন বিহার থেকে তার বাবা-মা কোটায় পৌঁছালে তাদের হাতে সন্তানকে তুলে দেয় পুলিশ।
প্রতি বছর কয়েক লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী সারা দেশ থেকে রাজস্থানের কোটা শহরে পড়াশোনা করতে যায়। সেখানে তারা বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে পড়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেলের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়। কোটা শহরও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য এমনভাবে তৈরি করে যাতে তারা পরীক্ষায় সফল হয়ে দেশের সেরা ইন্সটিটিউটগুলিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারি পড়তে পারে। কিন্তু এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে প্রতি বছরই বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী পিছিয়ে পড়ে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নেয়। আর সেই জন্য প্রতি বছরই কোটা শহর আত্মহত্যার সূচকে দেশের মধ্যে শীর্ষে থাকে। গত বছর শুধুমাত্র কোটা শহরেই ১৫টি আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছিল এবং চলতি বছর ইতিমধ্যেই সেই সংখ্যাটা ১৪-এ পৌঁছে গিয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন