গত সপ্তাহে হায়দ্রাবাদের জুবিলি হিলস এলাকায় ১৭ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত দুই কিশোরকে ইতিমধ্যেই পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন শাসক দল 'তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি'-র স্থানীয় নেতার ছেলে।
গত ২৮ মে হায়দ্রাবাদের একটি পাব থেকে পার্টি করে বাড়ি ফেরার সময় ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে হায়দ্রাবাদের জুবিলি হিলস এলাকায় গাড়ির মধ্যে ৫ জন মিলে পালা করে গণধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই ঘটনার জেরে প্রাথমিকভাবে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল এবং এফআইআর-এ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ নম্বর ধারাও যোগ করা হয়েছিল।
এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং ধর্ষিতা কিশোরীর দেওয়া বিবৃতির ভিত্তিতে পাঁচজনকে শনাক্ত করেছে। তাদের মধ্যে তিনজন নাবালক।
এই ঘটনার পরে তেলেঙ্গানার রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধ, বিভিন্ন রাজনীতিবিদের সন্তানদের বিলাসবহুল জীবন-যাপন, উশৃঙ্খলভাবে নামিদামী গাড়ি চালানোর অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তবে এ প্রসঙ্গে, সিনিয়র পুলিশ অফিসার জোয়েল ডেভিস বলেছেন যে, এই ঘটনার সাথে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাতির জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ভাইরাল হওয়া একটি সিসিটিভি ফুটেজের ক্লিপে কিশোরীটিকে ওই পাবের বাইরে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। যেখানে কিশোরীটি তাদের সাথে দেখা করেছিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলেগুলি কিশোরীটিকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। মেয়েটি তাদের বিশ্বাস করে সেই প্রস্তাবে রাজি হয়। এরপর তারা মেয়েটিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে প্রথমে একটি কেকের দোকানে যায়। সেখানে পার্ক করে রাখা একটি ইনোভার ভিতর পালা করে সেই কিশোরীটিকে ধর্ষণ করা হয়। ফুটেজে আরও দেখা গেছে, পালা করে ধর্ষণ করার সময় গাড়ির বাইরে বাকিরা পাহারা দিচ্ছিল, যাতে গাড়ির ভিতর কী হচ্ছে সেটা বাইরে থেকে বোঝা না যায়।
আরও জানা গেছে, মেয়েটির বাবার বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ প্রাথমিকভাবে 'শ্লীলতাহানি'-র ঘটনা হিসেবে মামলা দায়ের করে। পরে সেটি ধর্ষণে মামলায় রূপান্তরিত হয়। তেলেঙ্গানার শাসক টিআরএসের কার্যকরী সভাপতি এবং তেলেঙ্গানার মন্ত্রী কে টি রামা রাও শুক্রবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিচালক (ডিজিপি) এবং হায়দ্রাবাদ সিটি পুলিশ কমিশনারকে এই মামলায় "অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা" নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন