ভয়াবহ বন্যায় ভাসছে উত্তরপ্রদেশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে মোট ৩৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে প্রত্যেক পরিবারকে অবিলম্বে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এর পাশাপাশি, ব্যাপক বন্যায় ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আহতদের সরকারের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন যোগী।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, চলতি বর্ষার মরসুমে উত্তরপ্রদেশ ইতিমধ্যেই স্বাভাবিকের চেয়ে ১১ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাতের সাক্ষী থেকেছে। এর ফলে নদীতে জলস্তর বেড়েছে অনেকটাই। সূত্রের খবর, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা রাজ্যে ৩৬ জন মারা গিয়েছেন। যার মধ্যে বাজ পড়ে মারা গিয়েছেন ১৭ জন, জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন এবং ৭ জন মারা গিয়েছে অতি ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন ভাবে আক্রান্ত হয়ে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলার মধ্যে ৬৮টিতেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
তথ্য বলছে, শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় সে রাজ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫৬ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। স্বাভাবিক ৮.৭ মিলিমিটারের জায়গায় বৃষ্টির পরিমাণ ১৩.৬ মিলিমিটার। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে মুজফফরনগর, যেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির পরিমাণ ৬৭.৪ মিলিমিটার। এই তালিকায় এরপরে রয়েছে মিরাট (৫৬ মিমি), নাজিবাবাদ (৪২ মিমি), ঝাঁসি (৩৯ মিমি) এবং আলিগড় (২৫ মিমি)।
নিহতদের নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে রিলিফ কমিশন অফিসের তরফ থেকে। সেখানে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে বাজ পড়ে ১৭ জন মারা গিয়েছেন। যার মধ্যে এটাওয়া, উন্নাও, আগ্রা এবং বালিয়া জেলায় ১ জন করে; জালাউন, কানপুর দেহাত, কন্নাউজ এবং গাজিপুরে ২ জন করে; মেইনপুরি শহরে ৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে, জলে ডুবে মারা গিয়েছেন ১২ জন। যার মধ্যে সন্ত কবির নগরে ১ জন, বাদাউনে ২ জন, বারেলিতে ৪ জন এবং রায় বারেলিতে ৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়াও, অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এটাহ, কনৌজ, কৌশাম্ভি জেলায় একজন করে এবং মুজফফরনগরে ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, মাত্র তিন সপ্তাহ আগে এই উত্তরপ্রদেশই সাক্ষী থেকেছে ভয়ানক তাপপ্রবাহের। হিটস্ট্রোকে মারা যান ৫০-এরও বেশি মানুষ। পাশাপাশি, রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কয়েকশো মানুষ। মাত্র একমাসেরও কম সময়ে প্রকৃতির এই নজিরবিহীন পরিবর্তন আবহাওয়াবিদ থেকে শুরু করে পরিবেশবিদ, সবার কপালেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন