অবশেষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর শিলমোহর পেয়ে সংসদে পাশ হওয়া বিল থেকে আইনে পরিণত হল বহু বিতর্কিত দিল্লি অর্ডিন্যান্স বিল-সহ আরও তিনটি বিল। এই ৪টি বিলের মধ্যে দুটি বিল বিরোধীদের তুমুল প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছিল। কিন্তু মণিপুর নিয়ে বিরোধীদের প্রতিবাদের আড়ালেই সংসদে পাশ করিয়ে নেওয়া হয় ওই বিলগুলি। এমনকি বিরোধীদের প্রতিবাদের ভয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে সংসদে উপস্থিত থেকে পাশ করান দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণকারী অর্ডিন্যান্স বিল।
লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাশ হওয়ার পর শনিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূও কেন্দ্রের চার নয়া বিলকে আইন হিসেবে চালু করার ছাড়পত্র দিলেন। এর মধ্যে বহু বিতর্কিত ‘গভর্মেন্ট অফ ন্যাশনাল ক্যাপিটাল টেরিটরি অফ দিল্লি (সংশোধনী) বিল’ ছাড়া বাকি বিলগুলি হল ‘ডিজিটাল পার্সোনাল ডাটা প্রোটেকশন বিল (ডিপিডিপি)’, ‘রেজিস্ট্রেশন অফ বার্থস অ্যান্ড ডেথস (সংশোধনী) বিল’ এবং ‘জন বিশ্বাস (সংশোধনী ও বিধান) বিল’।
এই চারটি বিলের মধ্যে বিরোধীরা সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা করেছে রাজধানীর আমলা নিয়ন্ত্রণকারী দিল্লি সার্ভিসেস বিলের। এই বিল যখন ভোটাভুটির জন্য সংসদে পেশ করা হয় তখন বিরোধী মহাজোটের সদস্যরা একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সংসদ কক্ষ থেকে উঠে বেরিয়ে যান।
দিল্লির সার্ভিসেস বিলের মাধ্যমে রাজধানীর সরকারি আমলাদের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হাতেই থাকবে। কেজরিওয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে গোটা বিরোধী মহাজোট এই বিলের প্রবল বিরোধিতা করেছে। রাজধানীর আমলাদের নিয়ন্ত্রণ করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আপ সরকারের দীর্ঘ ৮ বছরের দ্বন্দ্বের জল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্তও গড়িয়েছে। শীর্ষ আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, রাজধানীতে নির্বাচিত সরকারই আমলা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে শেষ কথা বলবে। তা সত্ত্বেও সংসদে বিল পেশ করে কেন্দ্র।
অন্যদিকে, ডিজিটাল পার্সোনাল ডাটা প্রোটেকশন বিল নিয়েও বিরোধীরা কম কাঁটাছেঁড়া করেনি। এই ডিপিডিপি বিলের মাধ্যমে দেশকে ও দেশের মানুষকে কড়া নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হবে বলে অভিযোগ বিরোধী শিবিরের। বিরোধীদের দাবি, এই বিল নাগরিকদের গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করবে। বিলটি বিবেচনার জন্য সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানানো হয়। বিশেষজ্ঞ মহলও বারবার এই বিলের বিরোধিতা করে মুখ খুলেছে।
প্রসঙ্গত, এই বিলে বলা হয়েছে সরকার গঠিত বোর্ড যদি তদন্তের পর জানায় যে কোনও ব্যক্তি বা কোনও সংস্থা ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষা আইনের বিধি লঙ্ঘন করেছে, সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি বা সংস্থাকে প্রথমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর, মোটা অঙ্কের আর্থিক জরিমানা আরোপ করা হবে। যা সর্বাধিক ২৫০ কোটি টাকা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন