রান্নার গ্যাস সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে লোকসভায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদরা। এর জেরে চার জন কংগ্রেস সাংসদকে পুরো বাদল অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করেছেন লোকসভার অধ্যক্ষ (Loksabha Speaker) ওম বিড়লা (Om Birla)।
যে চারজন কংগ্রেস সাংসদ সাসপেন্ড হয়েছেন, তাঁরা হলেন- ১) মানিক্কাম টেগোর (Manickam Tagore), ২) জ্যোতিমণি (Jothimani), ৩) রাম্যা হরিদাস (Ramya Haridas) এবং ৪) টি এন প্রতাপন (TN Prathapan)।
গত ১৫ জুলাই, এক নির্দেশিকা জারি করেন রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেল পি সি মোদী। বুলেটিনে বলা হয়েছে, 'সংসদ ভবনের আশেপাশে কোথাও বিক্ষোভ, ধর্না, ধর্মঘট, অনশন, প্রতিবাদ, ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে পারবেন না সাংসদরা।' সোমবার, সেই নির্দেশিকা অমান্য করায় চলতি বাদল অধিবেশনে প্রথম এই পদক্ষেপ নিলেন লোকসভার স্পিকার।
জানা গিয়েছে, অধিবেশন চালাকালীন প্ল্যাকার্ড হাতে লোকসভায় বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস সাংসদরা। প্যাকেটজাত খাদ্যপণ্যের উপরে জিএসটি (GST) চাপানো, রান্নার গ্যাস সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস সাংসদরা। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে ওয়েলের দিকে এগিয়ে যান তাঁরা। এতে ক্ষুব্ধ হন স্পিকার ওম বিড়লা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, 'আমি সদস্যদের আহ্বান জানাচ্ছি যাতে তাঁরা সংসদে প্ল্যাকার্ড আনা বন্ধ করেন। সরকার আলোচনার জন্য প্রস্তুত। যে সদস্যরা সংসদে প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসবেন তাঁদের সংসদের কার্যক্রমে অংশ নিতে দেওয়া হবে না। এটি গণতন্ত্রের মন্দির, সংসদের মর্যাদা বজায় রাখা সদস্যদের দায়িত্ব।'
এর পরেই পুরো অধিবেশন থেকে কংগ্রেসের চার সাংসদকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করেন তিনি। সাসপেন্ড হওয়ার পরে সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে সংসদের মূল গেটের কাছেই প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখান চার কংগ্রেস সাংসদ।
এদিকে, লোকসভা অধ্যক্ষর এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অন্যান্য কংগ্রেস সাংসদরা। সংসদে বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না বলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী।
লোকসভায় কংগ্রেসের ডেপুটি নেতা গৌরব গগৈ (Gaurav Gogoi) বলেন, 'গ্যাস মূল্য বৃদ্ধি, ময়দা, ঘি, দুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের উপর জিএসটি চাপানোর নিয়ে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছিলেন সাংসদরা। সংসদ মুলতুবি রেখে এ নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছি আমরা। কিন্তু, কোনো আলোচনা হয়নি।'
একইসঙ্গে, এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য দাবি করেছে বিরোধীরা। তাঁরা জানিয়েছে, দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং পণ্য ও পরিষেবা কর চাপানো নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, সংসদে এসে তার সমাধান তুলে ধরতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল দাবি করেন, 'সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। কারণ আমরা জনগণকে জানাতে চাই যে, অন্যান্য দেশের তুলনায় মুদ্রাস্ফীতি কম রাখতে আমরা কী কী পদক্ষেপ করেছি। তাদের মিথ্যা প্রচার ফাঁস হবে জেনে, বিতর্ক থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিরোধীরা।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন