সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রীনগরের হায়দরপোরায় এনকাউন্টারে একজন চিকিৎসক, ব্যবসায়ী-সহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের পরিবারের দাবি, নিহতদের একজনকে ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। অন্য জনকে ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষে হত্যা করা হয়েছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে যাওয়ায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তকারী দল গঠন (সিট) করার কথা জানানো হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় হায়দরপোরায় বাণিজ্যিক ভবনে জঙ্গিদের সঙ্গে বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এদিন সকালে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের আইজি বিজয় কুমার জানান, সংঘর্ষে পাকিস্তানি জঙ্গি হায়দর ও তার এক স্থানীয় সঙ্গী বানিহালের বাসিন্দা আমির মাগরে নিহত হয়েছে।
বিজয় কুমার জানান, বাকি দুই নিহতের মধ্যে আলতাফ বাট ওই বাণিজ্যিক ভবনের মালিক। সেখানে তার একটি অফিস ছিল। মুদাসির গুল দন্তচিকিৎসক ও ব্যবসায়ী। ওই ভবনে তাঁর একটি কম্পিউটার সেন্টার ছিল। সে জঙ্গিদের সহযোগী। তিনিই হায়দর ও তার সঙ্গীকে আশ্রয় দিতে ওই বাণিজ্যিক ভবনে একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন।
বিজয়ের অভিযোগ, গত রবিবার শ্রীনগরের জামলতা এলাকায় এক কনস্টেবল গুলিতে আহত হন। সেই ঘটনায় হায়দর জড়িত। আলতাফ বাট দু’পক্ষের গুলি যুদ্ধের মধ্যে পড়ে যাওয়ায় নিহত হয়েছেন। কিন্তু জঙ্গি না বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। তাদের কাছ থেকে পিস্তল ও ম্যাগাজ়িন ছাড়াও কম্পিউটার ও মোবাইল উদ্ধার হয়েছে।'
আলতাফের বড় মেয়ের বক্তব্য, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন আমার বাবাকে নিয়ে সংঘর্ষের সময়ে তিন বার ওই বাড়িতে ঢুকেছিল বাহিনী। দু’বার ফিরতে দেওয়া হলেও তৃতীয় বার তিনি নিহত হন। বাহিনী তাঁকে ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করেছে বলে দাবি। মুদাসির গুলের মার দাবি, ‘জঙ্গিদের সঙ্গে ওর যোগ ছিল না।’ দেহ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান আলতাফ ও মুদাসিরের পরিবারের সদস্যেরা।
বিষয়টি নিয়ে পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লারও বক্তব্য, 'অতীতে বহু বার ভুয়ো সংঘর্ষ হয়েছে। দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত করা উচিত'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন