আগামী বছর দেশে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে চলতি বছরের শেষেই হবে রাজস্থান-সহ ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে বিজেপি ও কংগ্রেস দুই দলই পার্টির অন্দরমহলের বোঝাপড়া উন্নত করতে উদ্যোগী হয়েছে। গত মে মাসের শেষের দিকেই যেমন কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধীর মতো শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে অন্তর্দ্বন্দ্ব মিটেছে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট ও তাঁর প্রাক্তন ডেপুটি শচীন পাইলটের মধ্যে।
দীর্ঘ মনোমালিন্য কাটিয়ে আপাতত হাত ধরেছেন মরুরাজ্যের দুই কংগ্রেস প্রধান। দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটাতে কংগ্রেসের এই সক্রিয়তা আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ হিসেবে প্রতিপন্ন হবে কি না, তা নিয়েই একটি জনমত সমীক্ষা করেছে এবিপি-সি-ভোটার (ABP-C Voter)।
এবিপি-সি ভোটার সম্প্রতি রাজস্থানের ২০০টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় ১৪,০৮৫ জন ভোটদাতাকে নিয়ে এই সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষায় মানুষকে করা প্রশ্নগুলির মধ্যে অন্যতম একটি ছিল - বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেহলট ও পাইলটের হাত ধরাধরি আদৌ কংগ্রেসের জন্য মাস্টারস্ট্রোক হবে’ কি না।
সমীক্ষার ফলাফল অনুসারে, রাজস্থানের ৪৪ শতাংশ মানুষই মনে করছেন গেহলট ও পাইলটের মধ্যে সহাবস্থান আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জন্য সত্যিই মাস্টারস্ট্রোক হতে পারে। আবার ৩৪.৮ শতাংশ মানুষ কিন্তু একদমই তা মনে করেন না। অন্যদিকে, উত্তরদাতাদের ২০.৭ শতাংশ মানুষ এই নিয়ে কোনওরকম মন্তব্য করতে চাননি।
সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের বিভিন্ন দলের সমর্থক হিসেবেও ভাগ করা হয়েছে। সেই অনুযায়ী, বিজেপির ৩৭.১ শতাংশ মানুষ, কংগ্রেসের ৫৮.৬ শতাংশ মানুষ এবং অন্যান্য দলের ৩৭.৩ শতাংশ মানুষও মনে করেন গেহলট ও পাইলটের কাছাকাছি আসা কংগ্রেসকে আসন্ন নির্বাচনে সুফল এনে দেবে। আবার বিজেপির ৪১.৭ শতাংশ, কংগ্রেসের ২৩.১ শতাংশ এবং অন্যান্য দলের ৩৩.৩ শতাংশ মানুষ কিন্তু মনে করেন মরুরাজ্যের এই দুই কংগ্রেস প্রধানের হাত ধরাধরি নির্বাচনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই রাজস্থান কংগ্রেসের দুই প্রভাবশালী নেতা গেহলট বনাম পাইলট শিবিরের ঠান্ডা লড়াই চলছে। এর আগে বিদ্রোহের জেরে পাইলটকে উপমুখ্যমন্ত্রীত্ব হারাতে হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই রাজস্থানের দুই কংগ্রেস নেতার মধ্যে আবারও সংঘাত শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে রাজ্যের পূর্ববর্তী বিজেপি সরকারের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন মরুরাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়াই এই ইস্যুতে গেহলটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে অনশন কর্মসূচীও পালন করেন পাইলট। গত মে মাসের শেষে কর্ণাটকের বিধানসভা নির্বাচন মিটলে গেহলট ও পাইলটকে মুখোমুখি বসিয়ে ম্যারাথন বৈঠক করে সমস্ত অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটান কংগ্রেস প্রধান খাড়গে ও প্রাক্তন প্রধান রাহুল গান্ধী।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন