পাঁচজন ‘গ্রাম সুরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’-এর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার থেকে গোটা মণিপুর জুড়ে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন সুশীল সমাজ সংগঠন ও বিভিন্ন স্থানীয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। বুধবার সেই ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে রাজ্যের পাঁচটি উপত্যকা জেলার জনজীবন ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে মণিপুর পুলিশের দাবি, রাজ্যের বিষ্ণুপুর, কাকচিং, থৌবাল, পূর্ব ইম্ফল এবং পশ্চিম ইম্ফলে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু ঘটনার অভিযোগ সামনে এলেও বনধ সংক্রান্ত বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি।
সোমবারই রাজ্য জুড়ে ৪৮ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাঁচ গ্রাম সুরক্ষা স্বেচ্ছাসেবককে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে, এই দাবিতেই বনধ ডাকা হয়। তবে দুদিনের ধর্মঘটের পরেও মণিপুর পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচ গ্রাম সুরক্ষা স্বেচ্ছাসেবককে কোনোভাবেই মুক্তি দিতে পারবে না পুলিশ। কারণ ওই পাঁচজনের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রচুর গোলাবারুদ পাওয়া গিয়েছে। এমনকি গ্রেফতারের সময় তারা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ছিল বলেও জানিয়েছেন ওই পুলিশ আধিকারিক।
তবে সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার থেকেই পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলের আন্দোলনকারীরা কাঠের গুঁড়ি, জলের পাইপ ও জলন্ত টায়ার দিয়ে সেখানকার সমস্ত রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে। মূলত কেন্দ্র ও রাজ্যের নিরাপত্তারক্ষা বাহিনীকে আটকানোর জন্য রাস্তা অবরোধ করা হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। শুধুমাত্র দুই ইম্ফলেই নয়, রাজ্যের একাধিক জায়গাতেই এভাবে রাস্তা অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সের মতো জরুরীকালীন পরিষেবার যাতে কোনওরকম ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকেও সমানভাবে খেয়াল রেখেছেন আন্দোলনকারীরা।
সংবাদসংস্থা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুদিনের ধর্মঘতে রাজ্য জুড়ে সমস্ত বেসামরিক যান চলাচল বন্ধ ছিল। রাস্তায় নামেনি আন্তঃজেলা, আন্তঃরাজ্য বাস ও ট্রাক। পাশাপাশি, দুদিন ধরেই বন্ধ রয়েছে দোকানপাট, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ব্যাঙ্ক ও সরকারি দফতরগুলিও। এমনকি, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার ও বুধবারের সমস্ত পরীক্ষাও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর পরও আন্দোলনকারীদের দাবি মানতে নারাজ মণিপুরের পুলিশ।
প্রসঙ্গত, রবিবার পূর্ব ইম্ফলের পোরোম্পাত থানায় ওই পাঁচ বন্দির মুক্তির দাবি জানিয়ে আন্দোলন করেন ধর্মঘটীরা। দীর্ঘক্ষণ বাদানুবাদের পর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করে পুলিশ। কিন্তু এই ঘটনায় র্যাফ (Rapid Action Force)-এর বেশ কয়েকজন জওয়ান-সহ অনেকেই আহত হন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন