বিভিন্ন ব্যাঙ্ক থেকে শীর্ষ ৫০ জন ঋণ খেলাপি (Wilful Defaulters) ‘আত্মসাৎ’ করেছে দেশের ৯২ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। বুধবার, সংসদে ২০২১-২২ সালের তথ্য তুলে ধরে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভগবন্ত কারাদ।
লিখিত উত্তরে ভাগবত কারাদ জানান, এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন পলাতক হীরা ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। তাঁর মালিকানাধীন গীতাঞ্জলি জেমস (Gitanjali Gems) কোম্পানি ৭ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি করেছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র তথ্য তুলে ধরে অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানান, মেহুল চোকসির পরেই রয়েছে ইরা ইনফ্রা (Era Infra) কোম্পানি। তাঁদের ঋণ খেলাপির পরিমাণ ৫ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে, রিগো এগ্রো (Reigo Agro) কোম্পানি। এই কোম্পানির ঋণ খেলাপির পরিমাণ ৪ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা।
উইলফুল ডিফল্টার (Wilful Defaulters) বলতে সেই সকল ঋণগ্রহীতাদের বোঝানো হয়, যাদের ঋণ ফেরত দেওয়ার উপায় আছে কিন্তু তারা তা করেন না। এই ঋণগ্রহীতাদের ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কোনো সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এদিন যে তালিকা সামনে এনেছেন, তাতে একাধিক কোম্পানির নাম রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- কনকাস্ট স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার (Concast Steel and Power) কোম্পানি। এই কোম্পানির ঋণ খেলাপির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা।
এছাড়া রয়েছে- ABG শিপইয়ার্ড (ঋণ খেলাপি ৩ হাজার ৭০৮ কোটি টাকা), ফ্রস্ট ইন্টারন্যাশনাল (ঋণ খেলাপি ৩ হাজার ৩১১ কোটি টাকা), উইনসম ডায়মন্ডস অ্যান্ড জুয়েলারি (ঋণ খেলাপি ২ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা), রোটোম্যাক গ্লোবাল (ঋণ খেলাপি ২ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা), কোস্টাল প্রজেক্টস (ঋণ খেলাপি ২ হাজার ৩১১ কোটি টাকা) এবং জুম ডেভেলপার (ঋণ খেলাপি ২ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা)।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাঙ্কগুলির মোট নন-পারফর্মিং অ্যাসেট (NPA) বা অনাদায়ী ঋণের পরিমান হল ৮.৯ লক্ষ কোটি টাকা।
মঙ্গলবারই, সংসদের কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী ভাগবত কারাদ লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, ‘২০২১-২২ আর্থিক বছর পর্যন্ত, রিট-অফের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের ব্যালেন্স শীট থেকে থেকে ১১.১৭ লক্ষ কোটি টাকার খারাপ (অনাদায়ী) ঋণ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
সেই সূত্র ধরে, বুধবার মন্ত্রী করাদ জানান, ভারতের বৃহত্তম পাবলিক সেক্টর ব্যাঙ্ক- ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ রিট-অফের (Write off) মাধ্যমে ২ লক্ষ কোটি টাকা ব্যালেন্স শীট থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এরপরেই রয়েছে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (PNB)। এই ব্যাঙ্কের রিট-অফের পরিমান ৬৭ হাজার ২১৪ কোটি টাকা।
এছাড়া, বেসরকারি ব্যাঙ্ক -ICICI ব্যাঙ্ক ৫০ হাজার ৫১৪ কোটি টাকার লোন রিট-অফ করেছে। তারপরে রয়েছে- HDFC ব্যাঙ্ক, এই ব্যাঙ্কের রিট-অফের পরিমান ৩৪ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন