সোশ্যাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক বক্তব্যের রূপরেখা বোঝাতে বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের বিতর্কিত মন্তব্যের উদাহরণ টানলেন ফেসবুক প্রধান মার্ক জুকারবার্গ। এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন বিজেপি নেতা, যেই হুমকির পরই উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রায় ৫৫ জনের মৃত্যু হয়, উস্কানিমূলক মন্তব্যের সীমারেখা বোঝাতে সেই পোস্টের কথা উল্লেখ করলেন জুকারবার্গ। যদিও বিজেপি নেতার নাম ব্যবহার করেননি তিনি।
গত মঙ্গলবার নিজের কর্মচারীদের সাথে করা একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে জুকারবার্গ বলেন, "ভারতেও এরকম অনেক ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, সেখানে কেউ একজন বলেছিলেন, 'পুলিশ যদি এই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দেয়, তাহলে আমাদের সমর্থকরা ওখানে যাবে এবং রাস্তা থেকে ওদের সরিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে দেবে।' এটি হলো সরাসরি উস্কানিমূলক মন্তব্য করে সমর্থকদের উৎসাহিত করা। আমরা এই পোস্টটি মুছে দিই। আমরা জানি কোনটা সরাসরি উস্কানিমূলক মন্তব্য আর কোনটা না। আমাদের কাছে এর নজির রয়েছে।"
গত সপ্তাহে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার প্রতিবাদে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ প্রসঙ্গে হুমকির সুরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফেসবুকে লিখেছিলেন, "লুটপাট শুরু হলেই গুলি চালানো শুরু হবে।" গণঅধিকার পর্ব চলাকালীন মিয়ামির পুলিশ প্রধান এই বাক্যটি ব্যবহার করেছিলেন। ট্রাম্পের এই পোস্ট মুহূর্তে ভাইরাল হয় এবং নেটিজেনদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই পোস্টে কেন সেন্সর বা লেভেল লাগানো হয়নি, তা নিয়ে সংস্থার কর্মচারীদের তীব্র ক্ষোভের মুখে পড়েন মার্ক জুকারবার্গ। কর্মচারীদের ক্ষোভের জবাবে একথা জানিয়েছেন জুকারবার্গ। বৈঠকের একটি লিক হওয়া অংশ থেকে একথা জানা গিয়েছে।
বৈঠকে এই পোস্ট প্রসঙ্গে জুকারবার্গ বলেন, তিনি মনে করেন না ট্রাম্পের মন্তব্য হিংসায় সরাসরি প্ররোচনা দিয়েছে। অর্থাৎ ট্রাম্পের মন্তব্য ফেসবুকের নিয়মকে লঙ্ঘন করে না তাই এই পোস্টে সেন্সর লাগানোর কোনো দরকার নেই। জানা গেছে তাঁর এই মন্তব্যের সাথে সহমত হননি বহু কর্মচারীই।
দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রের যে মন্তব্যের কথা এখানে জুকারবার্গ উল্লেখ করেছেন, সেখানে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরানোর জন্য দিল্লি পুলিশকে তিনদিনের চূড়ান্ত সময় দিয়েছিলেন কপিল মিশ্র। এর মধ্যে যদি বিক্ষোভকারীদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া না হয়, তাহলে তিনি তাঁর দলবল নিয়ে রাস্তায় নামবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। সেই হুমকির ভিডিও তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন