দেশের অগ্রগতির জন্য যুবকদের সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন নারায়ন মূর্তি। ইনফোসিস অধিকর্তার এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছিল দেশজুড়ে। বেশ কয়েকজন শিল্পপতি মূর্তির মন্তব্য সমর্থন করলেও দেশের যুবকরা তাঁর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করেছিলেন। এবার তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন করলেন কংগ্রেস নেতা মনীশ তিওয়ারি। তাঁর মতো কিছু জনপ্রতিনিধি কাজের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সপ্তাহে ৭ দিন ১২-১৫ ঘণ্টা কাজ করেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
কংগ্রেস সাংসদ মনীশ তিওয়ারি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আমি বুঝতে পারছি না, সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা সংক্রান্ত ইনফোসিস কর্তার মন্তব্য নিয়ে এত বিতর্ক কেন হচ্ছে? আমার মতো কিছু জনপ্রতিনিধিকে সপ্তাহে সাতদিনই ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা করে কাজ করতে হয়। আমি শেষ কোন রবিবার ছুটি নিয়েছি মনে পড়ে না। আপনি নির্বাচিত হন কি না হন, মাঠে-ঘাটে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে রবিবার দিনও সারাদিন কাজ করতে হয় আমাদের।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “ভারত যদি সত্যিই বিশ্বের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দেশ হয়ে উঠতে চায়, তাহলে একটি বা দুটি প্রজন্মকে সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টার কাজকে নিজেদের কাজের নৈতিকতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের সঙ্গে একদিনের ছুটি এবং বছরে মাত্র ১৫ দিনের ছুটি, এটাই নিয়ম করে দেওয়া উচিত।”
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবর মাসে ইনফোসিস কর্তার সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের মন্তব্য নিয়ে সমাজমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এই বিষয়ে ইনফোসিস কর্তার মন্তব্যের সঙ্গে সহমত হননি।
এই বিষয় নিয়ে একটি অনলাইন পডকাস্টে নারায়ণ মূর্তি জানিয়েছিলেন, “ভারতে কাজের উৎপাদনশীলতা বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন। আমরা যদি আমাদের উৎপাদনশীলতা না বাড়াতে পারি, তাহলে আমরা কখনই সেই দেশগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারব না যারা এক্ষেত্রে অসাধারন উন্নতি করেছে। তাই আমার অনুরোধ, দেশের তরুণ প্রজন্ম যেন ‘এটা আমার দেশ আর আমি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করতে চাই’ এই মনোভাব নিয়ে কাজ করে।” এই বিষয়ে জাপান ও জার্মানির উদাহরণ দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর একটা বড় সময় ধরে জার্মান এবং জাপানিরা অতিরিক্ত কয়েকঘণ্টা কাজ করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন