নীতি আয়োগের চেয়ারম্যানের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ফের মোদী সরকারের সমালোচনায় অমর্ত্য সেন

অমর্ত্য সেন ও রাজীব কুমার
অমর্ত্য সেন ও রাজীব কুমারফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

মোদী সরকারের ওপর যে তিনি সন্তুষ্ট নন আবারও বেশ স্পষ্টভাবে তিনি বুঝিয়ে দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। ২০১৯ এর নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প কোনো নেতা নেই, একথাও মানছেন না তিনি। তাঁর কথায়, ভারতে সংকটের সময় বহু গুরুত্বপূর্ণ নেতা রাজনীতিতে এসেছে। এই মহান দেশের ঐতিহ্য এটা। কারও কোনও বিকল্প নেই, এই ধারণা ঠিক নয়।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীকেই সেই বিকল্প নেতা হিসেবে মনে করেন কি অমর্ত্য সেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাহুল বিকল্প কিনা, তা এখনই ঠিক করে বলা যায় না। তবে প্রতিভা ও উদ্যম আছে রাহুল গাঁধীর। ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে তিনি উঠে আসতেও পারেন আবার অন্য কোনও নেতাও উঠে আসতে পারেন।

কিছুদিন আগে মোদী সরকারের আমলে 'সাফল্য'-এর খতিয়ান তুলে ধরে নীতি আয়োগের উপাধক্ষ্য রাজীব কুমার অমর্ত্য সেনকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন। রাজীব কুমার বলেছিলেন, অমর্ত্য সেন দেশে থাকেন না। তাই সরকারের জনকল্যাণকর কাজগুলি উনি জানেন না। কয়েকদিন অমর্ত্য সেন যেন দেশে এসে থেকে যান। রাজীব কুমারের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এদিন এক সংবাদ চ্যানেলে রাজীব কুমারের মুখোমুখি হয়ে অমর্ত্য সেন আবারও মোদী সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।

অমর্ত্য সেন বলেন, বছরের মধ্যে অনেক সময় তিনি শান্তিনিকেতনে থাকেন। তাছাড়া দেশের সমস্ত খবর তিনি রাখেন। রাজীব কুমার সাফল্যের যে সরকারি পরিসংখ্যান দিয়েছেন, বাস্তবের সাথে তার অনেক পার্থক্য। মৌলিক নাগরিক সুবিধার যে সূচকগুলি প্রকাশিত হয়, সেখানে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড সর্বদা ওপরেই থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পাকিস্তান, বাংলাদেশও ভারতকে পেছনে ফেলেছে। বিদ্যুৎ বন্টন বা একশ দিনের কাজের সরকারি সাফল্য নিয়েও সরব তিনি। এগুলিকে আসলে আগের সরকারের কাজের ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

নোটবন্দী, যোজনা কমিশনের বিলোপ প্রভৃতি নরেন্দ্র মোদীর সরকারের আর্থিক নীতির বরাবরই কঠোর সমালোচক তিনি। মানবাধিকার পরিস্থিতি, সংখ্যালঘু ও দলিত নির্যাতনের মতো সামাজিক বিষয়গুলি নিয়েও বারবার সরব হয়েছেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। আগের থেকে অনেক ঝাঁঝালো ভাষায় অমর্ত্য সেন স্পষ্টভাবে বলেন, মোদী সরকারের সময়ে সংখ্যালঘু ও দলিতরা ভীত ও সন্ত্রস্ত। গণহিংসা বেড়েছে, গুজবে পিটিয়ে মারার ঘটনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। তাঁর মতে, দেশে আর গণতন্ত্র নেই, এখন জনতাতন্ত্রের(মবোক্র্যাসি) দাপট। শিল্প, সংস্কৃতির স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এসব নিয়ে অার যাই হোক উন্নয়ন হয় না।

তবে এই পরিস্থিতিতেও হতাশ নন বর্ষীয়ান এই অর্থনীতিবিদ। সঙ্কট অতিক্রম করার বহু অভিজ্ঞতা রয়েছে এদেশের মানুষের। মানুষই পথ খুঁজে নেবেন। মানুষের ওপর সেই বিশ্বাস আছে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in