উত্তরপ্রদেশে পণের বলি ২৩ বছর বয়সী সাত মাসের গর্ভবতী এক দলিত মহিলা। শ্বশুরবাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি। মৃত্যুর আগে ভাইয়ের জন্যে রেখে গেছেন ভয়েস মেসেজ।
পূজা যাদব নামে ওই দলিত মহিলার দশ মাস আগে বিবাহ হয়। পণের জন্য তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রতিনিয়ত অত্যাচার চালাতো তাঁর ওপর বলে অভিযোগ। ভয়েস মেসেজের কথা পুলিশকে জানানীর পরে তাঁর স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে পণ বিরোধী আইনে।
মৃতা তাঁর মেসেজে বলেছে, 'প্রিয় ভাই, আমি যা করতে যাচ্ছি তা তোমারা মেনে নিতে পারবে না। বাবা-মাকে বুঝিয়ে বোলো। তাঁরা যেন চিন্তা না করে। আমার মৃত্যুর পরে এবাড়ি থেকে একটা চামচও নেবে না আর পুলিশে কোন অভিযোগ করবে না।'
তিনি আরও বলেছেন, 'যখন তোমার বোন থাকবে না, তখন এই বাড়ির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখার দরকার নেই। কিচ্ছু কোরো না। তুমি বোনের জন্যে অনেক করেছ, দয়া করে এটা শোনো। গাড়িও ফেরত নেবে না। এটাই তোমাকে আমার শেষ কথা।'
ময়না তদন্তের রিপোর্টেও গলায় দড়ি দিয়ে মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
পূজার ছোটভাই রাজকুমার জানিয়েছেন, তাঁরা কৃষক পরিবার। পূজা স্নাতক। সে গত বছর সঞ্জীবকুমারকে বিয়ে করে। তখন থেকে পূজা বিজনোরের কামালপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতেই ছিল। সঞ্জীবকুমার রেলে চাকরি করে বলে জানিয়েছিল কিন্তু বিয়ের পর বোন জানতে পারে বর কোনো কাজ করে না। সঞ্জীব ও তার পরিবার বোনের ওপর অত্যাচার করত। আরও পণ আনার জন্য চাপ দিত। আগে গাড়ি সহ অনেক কিছুই দেওয়া হয়েছিল।
রাজকুমারের দাবি এটা আত্মহত্যা নয়, পণের জন্য তাঁর দিদিকে খুন করা হয়েছে।
বিজনোরের পুলিশ সুপার ধরমবীর সিং জানিয়েছেন ভয়েস মেসেজটি অন্য এক ভাই রঞ্জনের উদ্দেশ্যে করা। তিনিই চাঁদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই সঞ্জীব ও তাঁর বাবাকে আটক করা হয়েছে। পণ চাওয়ার অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফেব্রুয়ারিতে একই ধরনের ঘটনায় আয়েশা বানু নামের এক মহিলা বেশ কয়েক মাস অত্যাচার সহ্য করার পরে নদীতে ঝাঁপ দেয় বলে অভিযোগ। তাঁরও বয়েস ছিল ২৩। মৃত্যুর আগে তিনিও ভয়েস মেসেজ করেছিলেন। তাতে পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছিলেন সে স্বামীকে মুক্তি দিচ্ছে। তাঁর স্বামী আরিফ খানকে আটক করা হয় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার দায়ে।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন