দুবার নাগরিকত্বের প্রমাণ দিয়েও হল না রক্ষা। ফের একবার নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য ডেকে পাঠানো হল ৬০ বছরের নট সুন্দরীকে। পাশাপাশি একই নোটিস দেওয়া হয় তাঁর ছেলে ও স্বামীকেও। এই নিয়ে তৃতীয়বার আইনি নোটিশ দেওয়া হল আসামের ঐ পরিবারকে।
৮ জুন কাশীনাথ মণ্ডলের স্ত্রী নট সুন্দরীকে একটা নোটিশ দেয় সোনিতপুর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, তিনি ১৯৬৬ সালে ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চের মধ্যে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন। তাঁকে ট্রাইব্যুনালের সামনে ভারতীয় হওয়ার প্রমাণ দিতে হবে। যেটা নিয়ে ঐ পরিবার রীতিমতো চিন্তায় পড়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, তাঁরা এর আগেও দুবার ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় হওয়ার নথি জমা দিয়েছেন।
কাশীনাথ মন্ডলের আরেক ছেলে নকুল মণ্ডল বলেন, ২০১৬ সালে বিভিন্ন আইনি কাগজপত্র জমা করা হয়েছিল। সোনিতপুর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল সেইসব নথি বিচার করেই ভারতীয় হিসাবে তাঁদেরকে স্বীকৃতি দেয়। পাশাপাশি তিনি বলেন, এইধরণের নোটিশ ২০১৮ সালেও তাঁর দিদিকেও দেওয়া হয়েছিল। ঐ বছরেই তাঁর বাবা কাশীনাথকে নোটিশ দেওয়া হয়। তবে ভয় না পেয়ে ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। নকুল আরও বলেন, তাঁর বাবা এইসব আইনি লড়াই করে করে ক্লান্ত হয়েগেছেন। পরিবারের দাবি তাঁদের নাম ১৯৬৬ ও ১৯৭১ সালের ভোটার লিস্টেও আছে। তারপরে এইধরণের নোটিস যুক্তিহীন।
নকুল জানান, ‘আমাদেরকে ছয়টা গোরু বেচতে হয়েছে আইনজীবীর পারিশ্রমিক মেটাতে। প্রতি কেসে প্রায় ৫০,০০০ টাকা দিতে হয়েছে। এখনও পর্যন্ত আমাদেরকে ১.৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে শুধুমাত্র ভারতীয় হওয়ার প্রমাণ দিতে। আমি জানিনা আমার বয়স্ক বাবা এরপর কী করবেন। আমি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে ন্যায় বিচারের অনুরোধ জানাচ্ছি’।
উল্লেখ্য, গত ৬ মে গুয়াহাটি আদালত রায় দিয়েছে একবার ভারতীয় হিসাবে প্রমাণিত হলে তাঁকে পুনরায় প্রমাণ দিতে হবে না। কিন্তু আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আসামে এমন ঘটনা বার বার ঘটছে। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল আদালত থেকে আসামের একাধিক নাগরিককে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য প্রতিনিয়ত নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। এমনকি মার্চ মাসে কাছাড় জেলার ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে একজন মৃত ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য বৈধ নথি চাওয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন