হরিয়ানার নুহতে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর সঙ্গে যুক্ত থাকার অপরাধে গত ৪ আগস্ট হিন্দুত্ববাদী নেতা রাজকুমার ওরফে বিট্টু বজরঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু কে এই বিট্টু বজরঙ্গি? কী তাঁর পরিচয়? গত ৩১ জুলাই নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আয়োজিত ধর্মীয় মিছিলকে কেন্দ্র করে ছড়ানো সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় কী যোগ রয়েছে এই হিন্দুত্ববাদী নেতার?
ফরিদাবাদের স্বঘোষিত গো-রক্ষক সংগঠন ‘ফরিদাবাদ গৌ রক্ষা বজরং ফোর্স’-এর প্রধান বিট্টু বজরঙ্গি ওরফে রাজকুমার। সমাজমাধ্যমে ওই গো-রক্ষা সংগঠন নিজেদের ‘প্রাণী উদ্ধার পরিষেবক’ হিসেবে পরিচয় দিলেও তাঁদের করা পোস্টে হিংসায় মদতকারী বিষয় চোখে পড়ার মতো।
এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংগঠনের বহু পোস্টে বারবার ‘লাভ জিহাদ’-এর উল্লেখ থাকে। অন্যদিকে, নুহকাণ্ডে অভিযুক্ত আরও এক হিন্দুত্ববাদী নেতা তথা বজরং দলের সদস্য মনু মানেসরের সহকারী হিসেবেও পরিচিত বিট্টু। এই মনু মানেসরের বিরুদ্ধেও ৩১ জুলাই ভিএইচপি-এর মিছিলে উপস্থিত থেকে হিংসা ও হানাহানিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে তাকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
বিট্টু বজরঙ্গির বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই নুহতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্মীয় মিছিলে উপস্থিত থেকে হিংসায় মদত দেওয়া ও অস্ত্রের জোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই মিছিলের ভিডিও বানিয়ে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে হিংসা আরও ছড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে বিট্টুর বিরুদ্ধে।
হরিয়ানা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক সূত্রে খবর, গত ৩১ জুলাই যখন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলকে এক উন্মত্ত জনতা আক্রমণ করে, তখন বিট্টু ও তাঁর অনুগামীরা হাতে অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখাতে শুরু করে। পুলিশের তরফে ওইসব অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হলেও পরে পুলিশের গাড়িকে পাল্টা আক্রমণ করে অস্ত্র পুনরদ্ধার করে বিট্টুর অনুগামী দল।
যদিও এই প্রসঙ্গে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে এক বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, “বিট্টু বজরঙ্গি ওরফে রাজকুমার বজরং দলের একজন কর্মী হিসেবে পরিচিত হলেও সে আদৌও বজরং দলের সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত নয়। সে যেসব ভিডিও পোস্ট করেছে, সেগুলিকেও ভিএইচপি সত্য বলে মনে করে না।”
উল্লেখ্য, বিট্টু বজরঙ্গি ও তাঁর প্রায় ১৫ জন অনুগামীর বিরুদ্ধে পুলিশ দাঙ্গায় মদত দেওয়া, বেআইনি সমাবেশ, পুলিশ আধিকারিককে তাঁদের কাজ করতে দেওয়ায় বাধা দেওয়া, অস্ত্র লুঠ ও অপরাধমূলক হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। পাশাপাশি, অস্ত্র আইনের আওতায় মামলাও রুজু করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন