হঠাৎ করেই রাজ্যে বেড়েছে আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে গ্রাহকের অজান্তেই তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। গত কয়েকদিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উঠে আসছে এই অভিযোগ।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলায় মোবাইলে আসা এসএমএস থেকেই গ্রাহকরা এই ‘চুরি’র কথা জানতে পেরেছেন বলে দাবি অভিযোগকারীদের। কিন্তু মূলত আঙ্গুলের ছাপের মতো অত্যন্ত ব্যক্তিগত বায়োমেট্রিক তথ্য কীভাবে চুরি করে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলও কিছু বলতে পারছে না।
দেশের মানুষের কাছে খুব সহজে ডিজিটাল ও নগদহীন আর্থিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্যই এইপিএস (AEPS) বা আধার এনাবেলড পেমেন্ট সার্ভিস 'AADHAAR ENABLED PAYMENT SYSTEM' শুরু করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু এখন বায়োমেট্রিক তথ্য চুরি করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বাড়তে থাকা অভিযোগের পর কেন্দ্রের সেই ডিজিটাল ও নগদহীন পেমেন্ট ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এমনকি, এই ডিজিটাল পেমেন্ট পরিষেবা কোনোদিন নেননি এমন গ্রাহকদেরও আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। তবে, এই সংক্রান্ত কোনও দফতরই এই বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দেশের সাধারণ মানুষের এই আঙ্গুলের ছাপ নকল করে বা চুরি করে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া সহজ বিষয় নয়। কোথা থেকে কীভাবে এমন প্রতারণার জাল ছড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে ধন্দের শেষ নেই। এদিকে টাকা তুলে নেওয়ার পর ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেও লাভ হচ্ছে না, কারণ ব্যাঙ্ক থেকে বলা হচ্ছে বায়োমেট্রিক ব্যবহার করেই টাকা তোলা হয়েছে।
তাহলে এই মুহূর্তে এর প্রতিকার কী? আধার বিশেষজ্ঞরা এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গ্রাহকদের আপাতত তাঁদের বায়োমেট্রিক তথ্য ‘লক’ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। আধারের ওয়েবসাইট ‘www.uidai.gov.in’ এবং ‘mAadhaar’ মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক তথ্য লক বা বন্ধ করা যাবে। তবে এই দুই ক্ষেত্রেই আধারের সঙ্গে মোবাইল নম্বর যুক্ত থাকতে হবে।
তবে কোনো গ্রাহকের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটলে প্রাথমিকভাবে তাঁর করণীয় কী হবে? কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক SBI (State Bank of India) জানিয়েছে, কোনো SBI গ্রাহকের এমন অভিযোগ থাকলে সবার আগে তাকে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে এফআইআর করতে হবে। এরপর তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যাঙ্কের যে শাখায় রয়েছে, সেখানে আবেদন করতে হবে। সেখান থেকে অভিযোগ যাবে SBI-এর প্রতারণা মোকাবিলা সংক্রান্ত বিশেষ বিভাগে। তারা সেই অভিযোগ জানাবে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়াকে (NPCI)। সবশেষে যাবতীয় তদন্তের পর সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ওই প্রতারিত গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা ফেরত দেবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন