ভারত-কানাডা সম্পর্কের আরও অবনতি! ভারতে বাণিজ্য-সফর স্থগিত করার পর এবার খালিস্তানি জঙ্গি হত্যাকারী হিসেবে সরাসরি ভারতকে দায়ী করলো কানাডা। শুধু তাই নয়, অটোয়াতে নিযুক্ত ভারতের এক সিনিয়র কূটনীতিবিদকে বহিষ্কারও করেছে ট্রুডো প্রশাসন। কানাডার এই অভিযোগকে অস্বীকার করে এটিকে “অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত" বলে মন্তব্য করেছে ভারত। এবং এর পাল্টা হিসেবে ভারত একজন সিনিয়র কানাডিয়ান কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
কানাডায় খলিস্তানপন্থীদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সদ্যসমাপ্ত জি২০ সম্মেলনে কানাডার প্রতিনিধিকে তিরস্কার করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সম্মেলনের পরেই আচমকা কোনও কারণ ছাড়াই পূর্বনির্ধারিত ভারতে বাণিজ্যসফর স্থগিত ঘোষণা করে কানাডা। এবার কুটনীতিকে বহিষ্কারের এই পদক্ষেপ অটোয়া এবং নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্ককে আরও তিক্ত পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে।
গত জুনে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় খালিস্তানি সন্ত্রাসী হরদীপ সিংএর হত্যা হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মঙ্গলবার এক জরুরী অধিবেশনে জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে "ভারত সরকারের এজেন্টদের" যুক্ত থাকার “বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ” রয়েছে তাঁদের হাতে।
ট্রুডো বলেন, “কানাডার মাটিতে একজন কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যার ঘটনায় বিদেশী সরকারের যেকোনওরকম যোগাযোগ, আমাদের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে। এটি মৌলিক নিয়মের পরিপন্থী যার দ্বারা স্বাধীন, উন্মুক্ত এবং গণতান্ত্রিক সমাজ পরিচালিত হয়।“ এরপরই অটোয়াতে নিযুক্ত ভারতের এক সিনিয়র কূটনীতিবিদকে বহিষ্কার করে ট্রুডো।
যদিও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ "সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান" করেছে ভারত সরকার। কানাডার খালিস্থানিদের প্রতি এভাবে প্রকাশ্যে সহানুভূতি প্রকাশ নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে ভারত। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের তরকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই ধরনের অপ্রমাণিত অভিযোগগুলির মাধ্যমে আসলে খালিস্তানি জঙ্গি এবং চরমপন্থীদের থেকে ফোকাস সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যাদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং যারা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা হুমকি দিয়ে চলেছে৷ আমরা কানাডা সরকারকে তাদের দেশ থেকে পরিচালিত সমস্ত ভারত-বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে দ্রুত এবং কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।“
শুধু তাই নয়, “ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কানাডিয়ান কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ এবং ভারত বিরোধী কার্যকলাপে তাদের জড়িত থাকার” জন্য ভারতও আজ কানাডার একজন সিনিয়র কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। যদিও এই কূটনীতিবিদের নাম প্রকাশ করেনি ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। ভারত ছাড়ার জন্য পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন