রক্ত ক্ষরণ অব্যাহত। ঠেকানো যাচ্ছে না পতন। মাত্র ৩৫ দিনে আদানির সম্পত্তি কমেছে ৬৭%।
গত ২৪ জানুয়ারি, প্রকাশিত হয় হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট। এ সময় আদানি গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থার মোট সম্পত্তি ছিল ১২০ বিলিয়ন ডলার। তবে, ২৮ ফেব্রুয়ারি, আদানি গোষ্ঠীর মোট সম্পত্তি ১২০ থেকে ৩৭.৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে।
মঙ্গলবার, ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের তথ্যনুসারে গত একমাসে আদানি গোষ্ঠীর সম্পদ এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে। সম্পদ কমেছে ৮০ বিলিয়ন ডলার। যা দুই বছরের সর্বনিম্ন। বিশ্বের ধনীদের তালিকায় ৩ থেকে একধাক্কায় ৩২ নম্বরে নেমে এসেছেন গৌতম আদানি।
মনে করা হচ্ছে, দেশের স্টক মার্কেটের ইতিহাসে এটিই কোনও সংস্থার সবথেকে দ্রুত অর্থনৈতিক পতন।
আদানিদের বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের মূল অভিযোগই ছিল স্টক ম্যানিপুলেশন ও ট্যাক্সের অনুপযুক্ত ব্যবহার।
এছাড়া, আদানি গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান ঋণের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওয়াকিবহাল মহল। বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বাজার বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, আদানি গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত সাতটি প্রধান কোম্পনির ৮৫ শতাংশ নিম্নমুখী হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের পর, আদানি গোষ্ঠীর ১০টি সংস্থারই শেয়ারের দামে পতন ঘটেছে। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আদানি টোটাল গ্যাস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি ট্রান্সমিশন। গত এক মাসে এই তিনটি সংস্থার সম্পত্তি কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ।
জানা যাচ্ছে, গত ৫২ সপ্তাহ ধরেই আদানি গ্রুপের এই তিনটি সংস্থার শেয়ার ছিল উর্ধ্বগামী। কিন্তু হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের মাত্র এক মাসের মধ্যেই শেয়ারের দাম ৮২ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।
হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের জেরে চলমান রক্তক্ষরণে উদ্বিগ্ন আদানি গোষ্ঠীও। যদিও, বিনিয়োগকারী এবং বিশ্ব স্টেকহোল্ডারদের শান্ত করার চেষ্টা করছেন গৌতম আদানি। কিন্তু, তাতেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা ও শেয়ারহোল্ডাররা।
কারণ, হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট নিয়ে চলমান তদন্ত সম্পর্কে কোনও বিশদ তথ্য সামনে আনছে না সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)। যার জেরে, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা নিয়ে অন্ধকারে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
অন্যদিকে, এই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টেও শুনানি হচ্ছে। মিডিয়ায় সেই সংক্রান্ত খবর প্রকাশ বন্ধ রাখার আবেদন জানালেও, তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। ফলে, আদানিদের উদ্দেশ্য নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন