তামিলনাড়ুতে বাল্যবিবাহের সংখ্যা বাড়ছে। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সেখানকার রাজ্য সরকার (Tamil Nadu Govt.)। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে আসরে নামছে রাজ্যের সমাজকল্যাণ বিভাগ। ৩৮ টি জেলায় শুরু হতে চলেছে সচেতনতামূলক অভিযান।
নারী উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ১০টি করে বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। তথ্যে উল্লেখ্য, জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ২,৫১৬টি বাল্যবিবাহের খবর পাওয়া গেছে। যদিও এর মধ্যে প্রশাসনের সক্রিয়তায় ১৭৮২ টি বাল্যবিবাহ রোখা গেছে। তবে, ৭৩৪ টি বাল্যবিবাহ রোখা সম্ভব হয়নি।
দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, তামিলনাড়ুর নামক্কাল (Namakkal) জেলাতে সর্বোচ্চ ১৮২টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। বাল্যবিবাহের ঘটনায় সব মিলিয়ে মোট ৫৪৮টি FIR করেছে পুলিশ।
বাল্যবিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধির জেরে উদ্বিগ্ন তামিলনাড়ু সরকার। রাজ্যজুড়ে সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সমাজকল্যাণ বিভাগ। ফিল্ম ও টেলিভিশন তারকাদের মাধ্যমে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিনেমা, টেলিফিল্ম, টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাঝে ছোট ভিডিও আকারে সচেতনতা মূলক বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সমাজকল্যাণ বিভাগ সূত্রে খবর, বাল্যবিবাহে নমাক্কাল জেলা শীর্ষে থাকলেও, পিছিয়ে নেই রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলিও। যে তালিকায় কুড্ডালোর (Cuddalore), ডিন্ডিগুল (Dindigul), সালেম (Salem), কৃষ্ণগিরি (Krishnagiri), থেনি (Theni), তিরুচি (Tiruchi) এবং ইরোড (Erode) জেলার নাম রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, রাজ্যের আরিয়ালুর (Ariyalur), ধর্মপুরী (Dharmapuri), কৃষ্ণগিরি (Krishnagiri) এবং পুদুকোট্টাই (Pudukottai) জেলায় ৯৫ শতাংশ বাল্যবিবাহ সফলভাবে বন্ধ করেছে পুলিশ। এর প্রধান কারণ, বাল্যবিবাহ রুখতে এই জেলাগুলিতে ব্যাপক নজরদারি চালিয়েছে কিছু সামাজিক সংগঠন।
শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে যারা কাজ করছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হল ‘সীক’ (SEEK) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই সংস্থার পরিচালক রাজামোহন দাস IANS-কে জানান, ‘দারিদ্র্যতা এবং সম্প্রদায়গত সামাজিক কাঠামোর কারণে তামিলনাড়ুতে বাল্যবিবাহ বাড়ছে। নিশ্চিতভাবে এটির পরিবর্তন দরকার। এই অমানবিক কর্মকাণ্ড রুখতে সচেতনতার পাশাপাশি কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আমরা আমাদের সাধ্যমতো কাজ করছি কিন্তু সমস্যাটি অনেক গভীরে। তাই, সরকারের ইতিবাচক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।’
এছাড়া, সমাজকল্যাণ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা IANS-কে বলেন, 'রাজ্যের স্কুল শিক্ষা বিভাগের সঙ্গে যদি গ্রামীণ বিভাগ (পঞ্চায়েত দপ্তর) যৌথভাবে কাজ করে, তাহলে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে সম্প্রদায়গত বাধা রয়েছে। এর জন্য সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ। একইসঙ্গে, আমাদের লিঙ্গ সমতাকে প্রচার করতে হবে, যাতে করে মেয়ে শিশুরা নিজেদেরকে ছেলেদের থেকে নিকৃষ্ট মনে না করে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন