নোটবন্দির ৬ বছর পার। উদ্দেশ্য কি সফল হয়েছে? ২০১৬ সালে নোটবন্দির চার দিন আগে দেশের মানুষের হাতে যে পরিমাণ নগদ ছিল, ৬ বছর পর তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১.৮৪ শতাংশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)-র রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত শুক্রবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, নোট বাতিলের চারদিন আগে অর্থাৎ ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর দেশের মানুষের হাতে ছিল নগদ ১৭.৭ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি বছরের ২১ অক্টোবর তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা।
শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের ৮ অক্টোবরের হিসেব অনুযায়ী দেশের মানুষের হাতে নগদ ছিল ২৮.৩০ লক্ষ কোটি টাকা। এমনকি, ২০১৭-২০১৮ অর্থবর্ষে বাজারে নগদের জোগান যেখানে ১০.৭ শতাংশ ছিল, ২০২০-২০২১ সালে তা বেড়ে হয় ১৪.৪ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা, সন্ত্রাসবাদী ও বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপে নগদ টাকার ব্যবহার বন্ধ করতে এবং দেশকে ডিজিটালমুখী করতে তুলতে ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর নোটবন্দীর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। মাত্র ৪ ঘণ্টার নোটিশে বাতিল করা হয়েছিল ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট। যার ফলে চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়তে হয়েছিল সমগ্র দেশবাসীকে।
কিন্তু তারপরেও কি পরিস্থিতির বদল হয়েছে? বন্ধ হয়েছে সন্ত্রাসবাদী, দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপ? প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। মোদী সরকারের নোটবন্দির সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে ট্যুইটে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী জানান, "কালো টাকা ফেরত আসেনি, এসেছে শুধু দারিদ্র। অর্থনীতি নগদহীন নয়, ক্রমশ দুর্বল হয়েছে। দেশ সন্ত্রাসমুক্ত হয়নি, বরং কোটি কোটি ছোট ব্যবসা ও চাকরি হারিয়েছে মানুষ।"
মোদীকে সরাসরি নিশানা করে রাহুল আরও বলেন, ডিমনিটাইজেশন (নোটবন্দি) করে '৫০ দিনের' মধ্যে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন ‘রাজামশাই’ (পড়ুন নরেন্দ্র মোদী)। কিন্তু তা করতে গিয়ে গোটা দেশের অর্থনীতিকেই ধ্বংস করে ছেড়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, চলতি বছরের অক্টোবরে নোটবন্দি সংক্রান্ত একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সওয়ালে কেন্দ্র জানায়, নোটবন্দির বিষয়টি বর্তমান পরিস্থিতিতে আর প্রাসঙ্গিক নয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন