২৪ ঘন্টা পর অবশেষে খুলে দেওয়া হল পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানা। শুরু হয়েছে যান চলাচল। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭ টা নাগাদ থেকে পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম থেকে ডিভিসি (দামোদর ভ্যালি করপরেশন)-কে দুষছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঝাড়খণ্ড সরকার এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন তিনি। এই বন্যাকে ‘ম্যান মেড’ বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়ায় বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, আগামী ৭২ ঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে ঝাড়খণ্ড বর্ডার।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় সিল করে দেওয়া হয় আসানসোল-ঝাড়খণ্ড সীমানার ৫টি নাকা পয়েন্ট বা বর্ডার। ধানবাদ-আসানসোলের সংযোগকারী কল্যাণেশ্বরী-ডুবুডিহি চেকপোস্ট, বরাকর নদের উপর চিরকুণ্ডা-বরাকর চেকপোস্ট, ঝাড়খণ্ডের নলা-বারাবনির উপর রুনাকুড়া ঘাট, জামতাড়া-রূপনারায়ণপুর চেকপোস্ট ও মাইথন ড্যাম পেরিয়ে কল্যাণেশ্বরী রোডের নাকা চেকপোস্ট আটকে দেয় পুলিশ।
পণ্যবাহী গাড়ি আটকে দেওয়া হয় বা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। যার ফলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে সীমানায় আটকে যায় গাড়িগুলি। সিমলা থেকে আসছে আপেল, পাঞ্জাব থেকে আসছে নাসপাতি, দিল্লি থেকে আসছে সেনা ক্যাম্পের জন্য প্যাকেটবন্দি খাবার। সব আটকে যায় ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ডুবুডিহি চেকপোস্টে।
যার ফলে শুক্রবার সকালে ডুবুডিহি চেকপোস্টে দেখা যায়, ঝাড়খণ্ডের দিকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে পড়েছে। যানজটে পড়েছে ঝাড়খণ্ডের সীমানা লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলত ছোট গাড়ি এমনকি অ্যাম্বুল্যান্সের যাতায়াতও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাতেই ঝাড়খণ্ডের সীমানা লাগোয়া জেলাগুলির প্রশাসনিক আধিকারিক ও পুলিশ ডুবুরডিহিতে এসে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেন। ট্রাকগুলি ছাড়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠে পুলিশ তাতে রাজি হয়নি।
অন্যদিকে, দীর্ঘক্ষণ সীমান্তে আটকে থাকায় চালকেরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এরপর শুক্রবার দুপুরে সেই বিক্ষোভে এসে যোগ দেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক। জোর করে ট্রাক চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে চোকপোস্টে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাল্টা ঝাড়খণ্ডগামী সমস্ত যানবাহন আটকে দেন সেখানকার এমসিসি দলের কর্মীদের একাংশ।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ডিসি (ট্র্যাফিক) পিভিজি সতীশ-সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭ টা নাগাদ তুলে দেওয়া হয় পণ্যবাহী যান চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রয়োজনীয় নির্দেশ আসার পরেই পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন