ভারতে এসে মোদি সরকারকেই গণতন্ত্র রক্ষা নিয়ে খোঁচা দিলেন মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি স্পষ্টই জানালেন, গণতন্ত্রের সবথেকে বড় প্রমাণ ধর্মীয় স্বাধীনতা, মিডিয়ার স্বাধীনতা, আদালতের স্বাধীনতা। গণতন্ত্র পালনই ভারতের দীর্ঘকালের ঐতিহ্য। গণতন্ত্রের আবশ্যিক শর্ত প্রতিটি অধিকারকে টিকিয়ে রাখা। আর সেটাই করতে হবে। সরকারের সমালোচনা করার অধিকারও সবারই আছে।
তাঁর এই বক্তব্যে চরম অস্বস্তিতে কেন্দ্র। বাইডেন সরকার ক্ষমতায় আসার পর এটাই ব্লিঙ্কেনের গুরুত্বপূর্ণ ভারত সফর। বুধবার দিল্লি সফরে ‘সিভিল সোসাইটি রাউন্ড টেবিল’ নামক এক আলোচনায় মার্কিন বিদেশ সচিব বলেন, ভারত-আমেরিকার কাছে অগ্রাধিকার পায় মানুষের অধিকার ও সম্মান। সম্প্রতি ভারত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সখ্যতা বাড়াচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে। কিন্তু সেটা পছন্দ নয় আমেরিকার। তাই ব্লিঙ্কেনের এই সফরের উদ্দেশ্যই হল ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কের সমীকরণ বদল। বিষয়টি নিয়ে আমেরিকা উদ্বিগ্ন।
মার্কিন বিদেশ সচিব একদিকে যেমন বলেছেন, গোটা বিশ্বের মধ্যে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। আবার একইভাবে তিনি সামাজিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে ভারতকে স্পষ্ট বার্তাও দিয়েছেন—গণতন্ত্রে কোনও আঘাত নয়। ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘সরকারের সম্পর্কে সকলের কথা বলার অধিকার আছে। সরকারেরও উচিত প্রত্যেক নাগরিকের মতামত শোনা। বাক স্বাধীনতাই গণতন্ত্রের স্তম্ভ।’
সাম্প্রতিক কালে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বারবার বাক স্বাধীনতা হরণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি যে দেশের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বেও পৌঁছে গিয়েছে, তা ব্লিঙ্কেনের বক্তব্যেই স্পষ্ট। তিনি এদিন ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও বৈঠক করেন। আলোচনা হয় আফগানিস্তান নিয়ে। মার্কিন বাহিনী সরে আসার পর ক্ষমতা দখলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তালিবান। এই ঘটনা পরম্পরা দক্ষিণ এশিয়ার স্ট্র্যাটেজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলার পাশাপাশি উদ্বিগ্ন হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলও।
এছাড়া, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং ব্লিঙ্কেনের আলোচনাতে এদিন উঠে এসেছে চীন প্রসঙ্গ। উল্লেখ্য, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও জাপান একজোট হয়ে কোয়াড নামে একটি অক্ষ গঠন করেছে। চিনের অভিযোগ, এই অক্ষের প্রধান লক্ষ্য তারাই। আজ সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে দু'পক্ষই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন ব্লিঙ্কেন। পরে টুইটারে মোদি লেখেন, ‘ভারত ও আমেরিকার কৌশলগত সহযোগিতার ভিত মজবুত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দায়বদ্ধতাকে স্বাগত জানাচ্ছি।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন