ঋণের বোঝা সইতে না পেরে মধ্যপ্রদেশের ভোপালে আত্মঘাতী হল চার সদস্যের একটি পরিবার। একটি অনলাইন ঋণপ্রদানকারী অ্যাপ থেকে পরিবারের কর্তা প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা ফেরত না দিতে পেরে দুই শিশুপুত্রকে নিয়েই আত্মহত্যা করেছেন দম্পতি। মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র এই ঘটনায় শুক্রবার একটি তদন্তকারী দল সিট গঠন করেছে। পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই ধরণের অনলাইন ঋণপ্রদানকারী অ্যাপগুলিকে নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানান।
জানা গেছে, পরিবারের কর্তা ভূপেন্দ্র বিশ্বকর্মা একটি অনলাইন ঋণপ্রদানকারী অ্যাপের থেকে বিশাল অঙ্কের টাকা ধার নেন। আত্মহত্যার জায়গায় প্রাপ্ত একটি মোবাইল ফোনের মধ্যে সুইসাইড নোট খুঁজে পায় পুলিশ। ভোপাল পুলিশ সূত্রে খবর, ঋণ মেটাতে না পারায় ভূপেন্দ্র ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং ভূপেন্দ্রর মোবাইল হ্যাক করে তাঁর নগ্ন ছবি তাঁর আত্মীয়দের পাঠিয়ে দিয়ে ভয়ও দেখানো হয়েছে।
ভোপালের রাতিবাদ থানার এক সিনিয়র সাব-ইনস্পেক্টর এই নিয়ে জানিয়েছেন, “প্রাথমিক তদন্তের পর আমরা জানতে পেরেছি যে ভূপেন্দ্র একটি অনলাইন অ্যাপ থেকে ১৭ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সুইসাইড নোটের ইঙ্গিত অনুযায়ী সেই টাকার পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। ওই দম্পতি প্রথমে তাঁদের দুই শিশু সন্তানকে বিষ দিয়ে হত্যা করেন। তারপর নিজেরাও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূপেন্দ্র তাঁর সুইসাইড নোটে বারবার করে ‘ঋণ ফাঁদ’-এর কথা উল্লেখ করে বলেছেন সেই ঋণ শোধের জন্য তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে অনেক চাপ দেওয়া হচ্ছিল। নোটটিতে ভূপেন্দ্র লিখেছেন, “আমার একটি ভুলের জন্য আমার গোটা পরিবার অনেক কষ্ট পেয়েছে। সবার কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি একটি অনলাইন ফার্মে চাকরি করছিলাম যারা মানুষকে ঋণ দেয়। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি ওটা আসলে একটি ফাঁদ ছিল। আমি আমার পরিবার আর আমার বাবা-মায়ের কাছে ক্ষমা চাইছি।”
এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গঠন করে মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র শুক্রবার জানিয়েছেন, “আমি পুলিশকে এইধরণের ঋণপ্রদানকারী অ্যাপগুলির একটি তালিকা তৈরি করতে বলেছি। আর কেন্দ্রের কাছে আমার অনুরোধ, এইধরণের অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে যত দ্রুত সম্ভব নিষিদ্ধ করা হোক।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন