দ্বিতীয় বার চাঁদের মাটিতে পা রাখতে সফল হয়েছে ভারত। আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের পর বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছে ভারতের চন্দ্রযান-৩। পাশাপাশি, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে ভারত। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO)-এর এই সাফল্যে গোটা দেশ গর্বিত। কিন্তু সেই সাফল্যের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পরবর্তী অভিযানের কথা জানিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চাঁদের পর এবার তাঁদের লক্ষ্য সূর্য।
চন্দ্রজয়ের পর বিন্দুমাত্র ‘বিশ্রাম’ না নিয়েই এবার সূর্যকে পাখির চোখ করেছে ইসরো। গত ২৩ আগস্ট চাঁদের মাটি ছোঁয়ার পরেই পরবর্তী সৌর অভিযানের দিনক্ষণ পাকা করে ফেলেছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। আগামী ২ সেপ্টেম্বর শ্রীহরিকোটা থেকে সূর্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেবে ভারতের প্রথম সৌরযান ‘আদিত্য L1’।
ইসরো সূত্রে খবর, মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে সূর্যের থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বে ‘Lagrange point 1’ বা L1-এর কাছাকাছি কোনও এক কক্ষপথে অবস্থান করবে, যেখানে পৃথিবী ও সূর্য উভয়েরই মাধ্যাকর্ষণ শক্তি কাজ করবে না। পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যবর্তী এমন একটি জায়গায় আদিত্য L1-কে অবস্থান করানো হবে যেখানে দুই বিপরীত মাধ্যাকর্ষণ শক্তির মাঝে জ্বালানি তেলের খরচ কমিয়ে মহাকাশযানটি স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে পারে। সেখান থেকেই সৌরযানটি দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করবে।
পাশাপাশি, এই সৌর অভিযানের মূল লক্ষ্য সূর্যের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ এবং মহাজাগতিক আবহাওয়ায় সূর্যের সেই ক্রিয়াকলাপের প্রভাব সম্পর্কে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই সৌর অভিযানের জন্য প্রায় ৪৬ মিলিয়ন টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে ইসরোর তরফ থেকে এই অভিযানের খরচ নিয়ে সরকারীভাবে কিছু জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, এই সৌর অভিযানের পাশাপাশি মহাকাশে মানুষ পাঠানোর ব্যবস্থাও প্রায় পাকা করে ফেলেছেন ইসরো বিজ্ঞানীরা। খুব শিগগিরি ৩ মহাকাশচারীর একটি দল নিয়ে মহাশূন্যে পাড়ি দেবে ভারতের ‘গগনযান’। ৩ দিনের ওই অভিযানে মহাকাশচারী সমেত যানটিকে পৃথিবীর বাইরে ৪০০ কিলোমিটারের একটি কক্ষপথে অবস্থান করানো হবে।
চলতি বছরের শুরুতেই কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ এই সৌর অভিযানের জন্য প্রায় ৯০.২৩ মিলিয়ন টাকার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। ‘গগনযান’ উৎক্ষেপণের দিনক্ষণ নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারীভাবে কিছু না জানানো হলেও, ইসরো সূত্রে খবর, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই প্রথমবারের জন্য মহাকাশচারী নিয়ে মহাশূন্যে পাড়ি দেবে ভারত।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন