পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের একটি তাজমহল। সেই তাজমহলের আবাসন কর এবং জলের কর দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠালো যোগী সরকার। যা দেখে কার্যত হতবাক প্রত্নতাত্ত্বিক থেকে শুরু করে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ASI)-র কর্মকর্তারা।
তাজমহলের জল কর এবং আবাসন কর হিসেবে ১.৯ কোটি টাকা এবং ১.৫ লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার জন্য ASI-কে নোটিশ পাঠিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আগ্রা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন। বিলগুলি মূলত ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ASI-কে বকেয়া পরিশোধ করতে বলেছে আগ্রা পৌরনিগম। নির্ধারিত সময়ে মধ্যে বকেয়া না মেটালে তাজমহলের সংযুক্তিকরণ করা হবে বলেই জানানো হয়েছে।
ASI কর্মকর্তাদের দাবি, তাজমহলকে ১৯২০ সালে ভারতের একটি সংরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। এমনকি, ব্রিটিশ আমলেও কখনো তাজমহলের উপর জল এবং আবাসন কর ধার্য করা হয়নি।
এই প্রসঙ্গে মিউনিসিপ্যাল কমিশনার নিখিল টি ফান্দে বলেন, "তাজমহলের কর সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পর্কে আমি অবগত নই। করের হিসেবের জন্য রাজ্যব্যাপী পরিচালিত ভৌগলিক তথ্য ব্যবস্থা GIS-র সমীক্ষার ভিত্তিতে নতুন নোটিশ জারি করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্য সরকারি অফিস এবং ধর্মীয় স্থানগুলির বকেয়ার ভিত্তিতেই তাদের নোটিশ জারি করা হয়েছে। আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে রিবেট প্রদান করা হয়। ASI-কে ইতিমধ্যেই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তাদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
সহকারী মিউনিসিপ্যাল কমিশনার এবং তাজগঞ্জ জোনের ইনচার্জ সরিতা সিং জানান, "তাজমহলে জল এবং আবাসন করের জন্য নোটিশ জারি করার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। জিআইএস সমীক্ষার ভিত্তিতে একটি বেসরকারি সংস্থাকে কর আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।"
অন্যদিকে ASI সুপারিনটেনডিং প্রত্নতাত্ত্বিক রাজ কুমার প্যাটেলের কথায়, "কোনও স্মৃতিস্তম্ভের উপর আবাসন কর প্রযোজ্য নয়। জলের বাণিজ্যিক ব্যবহার না হওয়ায় আমরাও কর দিতে বাধ্য নই। তাজমহল চত্বরের মধ্যে যে সবুজ বাগিচা রয়েছে, সেগুলি নিয়মিত পরিচর্যা করার জন্য জলের ব্যবহার করা হয়। এই প্রথম তাজমহলের উপর জল এবং আবাসন কর চেয়ে নোটিশ জারি করল রাজ্য সরকার। হয়ত ভুল করেও পাঠিয়ে থাকতে পারে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন