জ্ঞানবাপী মসজিদ ইস্যুতে জরুরি আলোচনায় বসেছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (AIMPLB)। মসজিদ কমিটিকে কিভাবে আইনি সহায়তা দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন ল বোর্ডের সদস্যরা। গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পিএস নরসীমার ডিভিশন বেঞ্চ জ্ঞানবাপী মসজিদে মুসলিমদের নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি ‘শিবলিঙ্গ’ এলাকায় নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশও দিয়েছেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড।
বুধবার সকালে বোর্ডের ভার্চুয়ালি আলোচনা শুরু হয়। এতে অংশ নেন বোর্ডের ৪৫ জন সদস্য। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস (IANS)-কে বোর্ডের এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে, তা নিয়ে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব। এই মামলায় মুসলিম পক্ষকে আইনি সাহায্য করবে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। একইসঙ্গে আমরা জনগণের কাছে বই এবং প্রচারপত্র নিয়ে যাব, যাতে সাধারণ মানুষ এই ইস্যুতে বিভ্রান্ত না হন।’ একইসঙ্গে তিনি জানান, ‘১৯৯১ সালের ধর্মস্থান আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলির অবস্থান জানতে চাইছি আমরা।’
প্রসঙ্গত, অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি বিতর্কে সাফল্য পাওয়ার পরেই জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরী করেছে হিন্দুত্ববাদীরা। অযোধ্যার রায়ের পরেই জ্ঞানবাপী ভেঙে মন্দির বানানোর দাবি তুলেছিল আখাড়া পরিষদ । কিন্তু, সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি জমি বিতর্কের রায় রামলালার পক্ষে দিতে গিয়েও বলেছিল, অন্য কোনও ঐতিহাসিক সৌধের ক্ষেত্রে এই রায়কে উদাহরণ হিসেবে ধরা হবে না। বাকি প্রতিটি ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের ধর্মস্থান আইন কঠোরভাবে কার্যকরী হবে।
জানা যাচ্ছে, গত সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের কাছে ‘ধর্মস্থান আইন-১৯৯১’-এর উল্লেখ করেছেন অঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ কমিটির বরিষ্ঠ আইনজীবী হুজেফা আহমদী। বারাণসী আদালতের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ চেয়ে তিনি শীর্ষ আদালতে জানিয়েছিলন, ‘১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্টে যে ধর্মস্থান যে অবস্থায় ছিল, তা অপরিবর্তিত থাকবে বলে বলা হয়েছিল এই আইনে। একইসঙ্গে, এই আইনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট যে ধর্মস্থান যে ধর্মীয় চরিত্রের ছিল, তাকে পরিবর্তন করার কোনও মামলা বা আবেদন দায়ের হলে তা গ্রাহ্য করা যাবে না এবং বকেয়া মামলা থাকলে তা বাতিল করা হবে।’
এবার এই আইনকে হাতিয়ার করেই আসরে নামছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড (AIMPLB)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন