কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে লোকসভায় স্বাধিকার ভঙ্গের (Privilege Motion) অভিযোগ আনলেন কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ মনিকাম ঠাকুর। শুধু অভিযোগ আনাই নয়, সভার স্পীকার ওম বিড়লার কাছে শাসকদলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের নামে নোটিশও পাঠিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ, বুধবার সভায় অনাস্থা বিতর্ক চলার সময় শাহ সংসদে বসে মহামান্য স্পীকারের সামনে অসত্য তথ্য পেশ করেছেন। মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ এলাকার আত্মঘাতী কৃষকের বিধবা স্ত্রী কলাবতী বান্দুরকারকে নিয়ে সংসদে অসত্য তথ্য পেশ করার জন্যই জারি করা হয়েছে নোটিশ।
প্রসঙ্গত, প্রায় দেড় দশক আগে মহারাষ্ট্রের বিদর্ভ-সহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষিক্ষেত্রে চরম দুর্দশা শুরু হয়েছিল। ঋণ নিয়ে তা ফেরত দিতে না পারায় আত্মঘাতী হয়েছিলেন বহু কৃষক। তাঁদের মধ্যেই একজন ছিলেন বিদর্ভ এলাকার বাসিন্দা কলাবতীর স্বামী। ২০০৮ সালে বিধবা কলাবতীর সঙ্গে তাঁর গ্রামে গিয়ে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। কলাবতীর দারিদ্র নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে তাকে সরকারের থেকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাসও দেন রাহুল। সেই সময় এই ঘটনা নিয়ে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছিল।
বুধবার সংসদের নিম্নকক্ষে মণিপুর প্রসঙ্গে অনাস্থা বিতর্ক চলাকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নাম না করে রাহুলকে আক্রমণ করতে গিয়ে ওই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এই মুহূর্তে সংসদ ভবনে এমন একজন নেতা রয়েছেন, যার রাজনৈতিক কেরিয়ার মোট ১৩ বার শুরু করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রত্যেকবারই সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। এমনকি ২০০৮ সালে কলাবতী নামক মহারাষ্ট্রের এক দরিদ্র কৃষকের বিধবা স্ত্রীর বাড়িতে খেতে গিয়েছিলেন। সেই সময় উনি কলাবতীর দারিদ্রতা নিয়ে সংসদেও অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু তারপরেও তো ৬ বছর দেশে আপনাদের সরকার ছিল। আমি শুধু এইটুকুই জিজ্ঞেস করতে চাই, ওঁর জন্য আপনি তারপরে কী করেছিলেন? বরং মোদী সরকারই ওকে বাড়ি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, রেশন, শৌচাগার-সহ সবরকম সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রদান করেছে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে লোকসভায় বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে স্পীকার ওম বিড়লার কাছে নোটিশও পাঠিয়েছেন কং সাংসদ মনিকাম ঠাকুর। বৃহস্পতিবার টুইটারে সেই নোটিশের প্রতিলিপি পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “গতকাল শ্রীমতি কলাবতীর কাহিনী নিয়ে সংসদে ভুল তথ্য পেশ করার জন্য আমি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিশেষাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ জানিয়ে স্পীকারের কাছে নোটিশও জমা করেছি।” তাঁর মতে, সংসদের নিয়মানুযায়ী একজন মন্ত্রীর দায়িত্ব হল সংসদে বক্তব্য রাখার সময় সঠিক ও সত্য তথ্যের পবিত্রতা বজায় রাখা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন