প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের দিন রেলের পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ বিপুলসংখ্যক চাকরি প্রার্থীর। বিহারের গয়ায় নয়াদিল্লিগামী শ্রমজীবী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। অন্য একটি ট্রেনে ইট-পাথর ছোঁড়া হয়। বিক্ষোভের জেরে পরীক্ষা সাসপেন্ড ঘোষণা করেছে সরকার এবং আন্দোলনকারীদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করেছে।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের নন-টেকনিক্যাল পপুলার ক্যাটাগরির গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে এই পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি জারির সময় বলা হয়েছিল একধাপেই পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা হয়ে গত ১৫ জানুয়ারি তার ফলাফলও প্রকাশিত হয়ে গেছে। কিন্তু সম্প্রতি RRB নতুন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে।
আন্দোলনকারীদের আরও অভিযোগ, ৫০ নম্বর পেয়েও কৃতকার্যের তালিকায় অনেকে জায়গা পেয়েছেন, আবার ৮০ থেকে ৮৫ নম্বর পাওয়া অনেকের তালিকায় নাম নেই। এই সমস্ত দুর্নীতির সাথে কর্মকর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের।
এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গত কয়েকদিন ধরেই ফুঁসছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন তা চরম আকার নেয়। পরিস্থিতি সবথেকে উত্তপ্ত হয় গয়া স্টেশনে। প্রথমে তেরঙা পতাকা হাতে রেল ট্র্যাকের ওপর প্রতিবাদ দেখান বিশাল সংখ্যক বিক্ষোভকারী। এরপর শ্রমজীবী এক্সপ্রেস স্টেশনে এলে ট্রেনটির কয়েকটি কোচে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
গয়ার পাশাপাশি পাটনা, আরা, বক্সার, সাসারাম, সীতামারহি, মুজফ্ফরপুর, বৈশালী, ভাবুয়া রোড, ভোজপুর সহ একাধিক জায়গায় বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। সীতামারিতে বিক্ষোভকারীদের থামাতে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে পুলিশ। বিক্ষোভের জেরে বহু ট্রেন বাতিল ঘোষণা করা হয়। কিছু ট্রেন ঘুরপথে চালানো হয়।
বিক্ষোভের জেরে পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। রেলমন্ত্রকের তরফ থেকে ট্যুইট করে জানানো হয়েছে, "NTPC CBT-1 ফলাফল নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করেছে রেল। ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের অভিযোগ জমা দিতে পারেন।"
বিষয়টি নিয়ে ট্যুইট করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আন্দোলনকারীদের আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে বিহার ও কেন্দ্র সরকারকে বিঁধেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ট্যুইটারে বিক্ষোভের ভিডিও শেয়ার করে তিনি লেখেন, "অধিকারের জন্য আওয়াজ তোলার স্বাধীনতা প্রত্যেক যুবকের রয়েছে। আর এটা যাঁরা ভুলে যান, তাঁদের মনে রাখা উচিত ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে গণতন্ত্র আছে, থাকবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন