কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজ্যের কাছে গত ২০ ডিসেম্বর সংশোধনীর প্রস্তাব পাঠানো হয়। ২৫ জানুয়ারির মধ্যে মতামত জানাতে বলা হয়। আইএএস ক্যাডার বিধি ১৯৫৪-তে এই প্রস্তাবের সংশোধনীর কথা বলা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার যদি জনস্বার্থে আইএএস অফিসারকে কেন্দ্রের কাজে নিয়োগ করতে চায়, তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকার ওই অফিসারকে ছেড়ে দেবে। যদি কোনও রাজ্য কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তকে রূপায়িত না করে, তাহলে ক্যাডারের কাজ থেকে অফিসার অব্যাহতি পাবেন।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আইএএসরা কোনও একটি রাজ্যকে ক্যাডার তালিকায় বেছে নেন। সব রাজ্যেরই এরকম ক্যাডার থাকে। তাঁদের সেই রাজ্য সরকারের অধীনে কাজ করতে হয়। সাধারণত ডেপুটি সেক্রেটারি বা ডিরেক্টর পর্যায় আইএএস অফিসারদের সেন্ট্রাল স্টাফিং স্কিমে কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রক বা দফতরে কাজে যোগ দিতে হয়। এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের মত নিয়েই রাজ্যের আইএএস অফিসারকে কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে নেওয়া যায়। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সেই সুযোগ থাকছে না।
কেন্দ্রের যুক্তি, কেন্দ্রের কাজ করার জন্য অফিসারের ঘাটতি রয়েছে। তাই রাজ্য সরকারের অফিসারদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় কেন্দ্র। কিন্তু রাজ্য ডেপুটেশনে যথেষ্ট সংখ্যক অফিসারদের ছাড়ছে না। রাজ্যের অভিযোগ, অফিসারদের উপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাইছে কেন্দ্র।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত অফিসারদের মধ্যে ভীতি তৈরি করবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো কেন্দ্র ও রাজ্য সমমর্যাদা পায়। যদিও নতুন সংশোধনীতে বেশ কিছু ক্ষেত্রে কেন্দ্রকে বেশি কর্তৃত্ব দেওয়া হয়েছে।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন জানিয়েছেন, এই সংশোধনীর নীতি অনুযায়ী অফিসার ও রাজ্যের অনুমতি ছাড়াই কেন্দ্র তাঁদের কাজে লাগাতে পারবে। এই নীতি অফিসারদের মনোবল ভেঙে দেবে। শাস্তির ভয় তাড়া করে বেড়াবে অফিসারদের।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা বিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন। বিরোধীরা এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়ে অভিযোগ করেছে, কেন্দ্রের উপর রাজ্যগুলি যাতে নির্ভর করে তার জন্যই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন