১৯৭৫ সালের ২৫ জুন তৎকালীন কংগ্রেস সরকার দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিল। ৪৯ বছর পর সেই দিনটিকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসাবে পালন করার কথা ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকার পর হঠাৎ করে এতদিন পর কেন এটা নিয়ে তৎপর হল এনডিএ সরকার? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।
শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে অমিত শাহ লেখেন, ‘‘১৯৭৫ সালের ২৫ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আমাদের দেশের গণতন্ত্রের আত্মাকে গলা টিপে হত্যা করেছিলেন। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন স্বৈরাচারী মানসিকতা কাকে বলে। বিনা অপরাধে সেই সময়ে জেলে গিয়েছিলেন লাখ লাখ মানুষ। সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধও করা হয়েছিল।“
তিনি আরও লেখেন, “সরকার তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতি বছর ২৫ জুন তারিখটিকে সংবিধান হত্যা দিবস হিসাবে পালন করার। ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার সময় যাঁরা ওই অমানবিক বেদনা সহ্য করেছিলেন, তাঁদের প্রতি সম্মান জানাবে দিনটি।’’
তৃতীয় বার ক্ষমতায় এসে হঠাৎ কেন এনিয়ে তৎপর হল মোদী সরকার? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ এত দিন এনিয়ে কোনো সমালোচনা করেনি মোদী সরকার। বরং ২৬ নভেম্বর তারিখটিকে সংবিধান দিবস হিসেবে পালন করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিল কেন্দ্র সরকার। কিন্তু বিরোধীরা ২৬ জানুয়ারির কথা বলে আপত্তি তুলেছিল।
এবিষয়ে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, কেন্দ্র সরকার বিরোধী জোটকে দুর্বল করতে চাইছে। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যে সময় জরুরি অবস্থা জারি করেছিল, সে সময় জন্ম হয়নি বিজেপির। ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা হয় ভারতীয় জনতা পার্টির। তার আগে ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় বিরোধীরা মিলে গঠন করে জনতা পার্টি। বর্তমানে তারাই কংগ্রেসের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে যোগ দিয়েছে। পুরানো স্মৃতি উস্কে দিয়ে বিরোধীদের জোট ভাঙতেই এই ঘোষণা মোদী সরকারের বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বিরোধী দলগুলি। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, 'বিগত ১০ বছর ধরে বিজেপি সংবিধানকে হত্যা করে আসছে। তাই আর নতুন করে সংবিধান হত্যা দিবস পালন করার দরকার নেই। আপনারা প্রতি মুহূর্তে দেশের প্রতিটি গরিব ও বঞ্চিত মানুষের আত্মসম্মান কেড়ে নিয়েছেন।'
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি বলেন, "দেশে সব থেকে বেশি জরুরি অবস্থা মোদীর আমলেই হচ্ছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন