ফের আদিবাসী হেনস্থা। মধ্যপ্রদেশের পর এবারের ঘটনা তার পড়শি রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে। এক আদিবাসী যুবককে মারধর করে পরে তাঁর মুখে প্রস্রাব করার অভিযোগ উঠেছে একটি দলের বিরুদ্ধে।
প্রায় একমাস আগের এই ঘটনার ভিডিও বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে গোটা দেশ জুড়ে। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম জেলার অঙ্গল শহরের এই ঘটনায় অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবি করেছেন স্থানীয় আদিবাসী গোষ্ঠীরা। অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ এখনও পর্যন্ত কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও মূল অভিযুক্ত এখনও পর্যন্ত পলাতক বলেই জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে আদিবাসী যুবকের মুখে এক বিজেপি নেতার প্রস্রাব করার ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল দেশ।
বুধবার একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক আদিবাসী যুবককে প্রথমে একদল যুবক মারধর করে। শেষে ওই দলের কয়েকজন ব্যক্তি তাঁর রক্তাক্ত মুখে প্রস্রাব করে তা পান করার জন্য জোর করেন। অন্যদিকে, নির্যাতিত যুবককে ওই ভিডিওতে পুরো সময়টাই অভিযুক্ত দলের কাছে ক্ষমা চাইতে ও তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে দেখা যায়। কিন্তু তাতে একবারও কর্ণপাত করেনি নির্যাতনকারী দল।
পুলিশের পক্ষ থেকে প্রাথমিক তদন্তের পর জানানো হয়েছে, নির্যাতিত যুবক নবীন ও মূল অভিযুক্ত রামানাঞ্জেয়ুলু আলিয়াস আঞ্জি ছোটবেলার বন্ধু এবং দুজনেরই অপরাধমূলক অতীত রয়েছে। দুজনের নামে প্রায় ৫০-এরও বেশি চুরির অভিযোগ রয়েছে। নবীন বারকয়েক পুলিশের হাতে ধরা পরে জেল খাটলেও তাঁর ‘বন্ধু’ আঞ্জি কোনও না কোনও কৌশলে প্রতিবারই পুলিশকে ফাঁকি দিয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি দুজনের সম্পর্কে চিড় ধরে। প্রায় একমাস আগে নবীনকে অঙ্গলের কেআইএমএস মেডিকেল কলেজের পিছনে একটি জায়গায় দেখা করতে বলে আঞ্জি। নবীন সেখানে পৌঁছে দেখতে পায় আঞ্জি সেখানে আরও ৮জন সঙ্গীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এরপর তাঁরা দীর্ঘক্ষণ বাদানুবাদে জড়ায়। শেষে আঞ্জির মদ্যপ সঙ্গীরা নবীনকে মারধর শুরু করে। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় যখন নবীন মাটিতে শুয়ে ছিল, তখনই অভিযুক্ত দলটির অন্তত তিনজন নবীনের মুখে প্রস্রাব করে তা পান করার জন্য জোর করে।
এই ঘটনার পর নির্যাতিত নবীনের করা অভিযোগের ভিত্তিতে অন্ধ্র পুলিশ তফশিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের আওতায় মামলা দায়ের করে আঞ্জি ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে। কিন্তু কোনও তারপরে পুলিশের পক্ষ থেকে আর কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। কিন্তু অভিযুক্ত দলেরই এক সদস্য ওই ঘটনার ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। তারপরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ এবং অভিযুক্ত দলের কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, মূল অভিযুক্ত আঞ্জি এখনও পলাতক।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন