আরও তীব্র হচ্ছে মহারাষ্ট্রের মারাঠা সংরক্ষণ আন্দোলন। সংরক্ষণের দাবিতে এবার রাজ্যে আত্মঘাতী হলেন আরও এক ব্যক্তি। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের বীড় জেলায় প্রকাশ্যে পুলিশের সামনেই একটি জলের ট্যাঙ্কে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন শত্রুঘ্ন কাশিদনামের এক ব্যক্তি। এই নিয়ে শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে মারাঠা সংরক্ষণ চেয়ে তিনজন ব্যক্তি আত্মঘাতী হলেন মহারাষ্ট্রে। এর আগে বৃহস্পতিবারই হিঙ্গলি জেলার কালামনুরি তহসিলের বাসিন্দা কৃষ্ণ কল্যাণকর নামের এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় পুলিশ।
আবার গত ২৪ অক্টোবর মহারাষ্ট্রের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে মারাঠা সংরক্ষণের দাবিতে মুম্বইয়ের বান্দ্রা অঞ্চলের এক উড়ালপুল থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন রাজ্যের জালনা অঞ্চলের বাসিন্দা বছর ৪৫-এর সুনীল কালভে। আত্মঘাতী হওয়ার আগে একটি তিন পাতার সুইসাইড নোটও লিখে যান সুনীল।
কৃষ্ণ কল্যাণকারের আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, ২৫ বছর বয়সী কৃষ্ণ কল্যাণকারের দেহের পাশ থেকেও একটি ছোট কাগজ পাওয়া গিয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, “শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে মারাঠা সংরক্ষণের আন্দোলনকে আরও উজ্জীবিত করার জন্যই আমি আত্মহননের পথ বেছে নিলাম।” অবশ্য বৃহস্পতিবারই এই একই দাবিতে আরও দুই আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেলেও পুলিশ তা অস্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ আগস্ট থেকে শিক্ষা ও চাকরিক্ষেত্রে মারাঠাদের ওবিসি হিসেবে সংরক্ষণের দাবিতে অনশন ধর্মঘটে বসেছিলেন মারাঠি নেতা মনোজ জারাঙ্গে পাতিল। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁর সঙ্গে দেখা করে সংরক্ষণ নিয়ে মনোজকে আশ্বস্ত করে অনশন প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। দুই পক্ষের মধ্যে সংরক্ষণ আনার জন্য ৪০ দিনের একটি সময় সমঝোতা হয়। কিন্তু ২৪ অক্টোবর সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়াতেই আন্দোলনকে আরও তীব্রতর করার সিদ্ধান্ত নেয় আন্দোলনকারীরা।
এই আন্দোলন ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বাধীন বিজেপি-শিবসেনা (শিন্ডে)-এনসিপি (অজিত) জোট সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। শুক্রবার এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারও এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেন, “কিছুদিন আগেই নাকি জারাঙ্গের সঙ্গে শিন্ডে ও তাঁর মন্ত্রিসভার কয়েকজনের কথা হয়েছে। সংরক্ষণের জন্য নাকি ৩০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই মেয়াদও পেরিয়ে গিয়েছে। যদি পূরণই করতে পারবে না, তাহলে এমন প্রতিশ্রুতি দেয় কেন সরকার?”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন