Indian Railway: ট্রেনের এসি কোচের কম্বল ধোয়া হয় মাসে মাত্র ১-২ বার? প্রকাশ্যে RTI-এর চাঞ্চল্যকর তথ্য

People's Reporter: কম্বলগুলো শুধুমাত্র ময়লা দেখালে বা তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালেই পরিষ্কারের জন্য পাঠানো হয়। ২০১৭ সালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, কিছু কম্বল ছয় মাস পর্যন্তও ধোয়া হয়না।
Indian Railway: ট্রেনের এসি কোচের কম্বল ধোয়া হয় মাসে মাত্র ১-২ বার? প্রকাশ্যে RTI-এর চাঞ্চল্যকর তথ্য
প্রতীকী ছবি
Published on

রেল যাত্রীদের জন্য একটি উদ্বেগজনক তথ্য সম্প্রতি সামনে এসেছে। জানা গেছে, এসি কোচে দেওয়া কম্বলগুলো মাসে মাত্র এক থেকে দু'বার পরিস্কার করা হয়। তথ্যের অধিকার আইন বা আরটিআই আবেদনের প্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ নিজেরাই একথা প্রকাশ করেছে। এরপর থেকেই যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি এবং নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ট্রেনের এসি কামরায় যাত্রীদের বিছানাপত্র হিসেবে চাদর, বালিশ এবং কম্বল সরবরাহ করা হয়। সাধারণত চাদর ও বালিশের কভার সাদা রঙের হওয়ায় তা পরিষ্কার দেখালেও, কম্বলগুলো বেশিরভাগ সময়ে কালো বা গাঢ় বাদামী রঙের হওয়ায় সেগুলোর স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয় যাত্রীদের মনে। অনেক কম্বল থেকে দুর্গন্ধও বেরোয়। যা দেখে প্রশ্ন ওঠে মাসে কতবার করে সেগুলি কাচা হয়। অনেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে সে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এই তথ্য জানতেই আরটিআই করা হয়েছিল। আর তাতেই উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য।

এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, রেল কর্তৃপক্ষ আরটিআই-এর আবেদনের জবাবে জানিয়েছে, চাদর এবং বালিশের কভার প্রতি যাত্রার পরেই ধোয়া হয়। কিন্তু কম্বলগুলো মাসে মাত্র একবার বা কখনও কখনও তাদের অবস্থার ওপর নির্ভর করে দু'বার ধোয়া হয়।

আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, কম্বলগুলো শুধুমাত্র ময়লা দেখালে বা তা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালেই পরিষ্কারের জন্য পাঠানো হয়। নতুবা ব্যবহারের পর দীর্ঘদিন তা ট্রেনের মধ্যেই ভাঁজ করে আবার রেখে দেওয়া হয়। ২০১৭ সালের কম্পট্রোলার এবং অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর এক রিপোর্টে বলা হয়েছিল, কিছু কম্বল ছয় মাস পর্যন্তও ধোয়া হয়না।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এও জানিয়েছে যে ট্রেনের ভাড়ার মধ্যেই এই বেডিংয়ের খরচ ধরা থাকে। যাত্রীদের প্রশ্ন, বেডিংয়ের জন্য তাঁদের কাছ থেকে খরচ নেওয়া হলে কম্বল সাফাই মাসে মাত্র দু’-একবার করা হয় কেন? যদিও পরিবেশ এবং গৃহপরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তা ঋষু গুপ্ত জানিয়েছেন, ট্রেনগুলোতে বিছানাপত্র পরিষ্কার করার যে মানদণ্ড রয়েছে তা কঠোরভাবে মানা হয়।

এবিষয়ে দূরপাল্লা ট্রেনের এক হাউসকিপিং কর্মী জানিয়েছেন, “যদি কোনও কম্বল থেকে দুর্গন্ধ বেরোয়, কেউ বমি করেন বা খাবার জাতীয় কিছু পড়ে তাহলেই আমরা কেবল ধোয়ার জন্য কম্বল দিই। অন্যথায়, আমরা সেগুলিকে ভাঁজ করে আবার ব্যবহার করি।" জানা গেছে, ওই কর্মীর এই কাজে দশ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

যাত্রীদের স্বাস্থ্যের প্রতি সুরক্ষা বজায় রাখা রেলওয়ের অন্যতম দায়িত্ব। তবে কম্বল পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া যাত্রীদের সংক্রমণ ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা অধিকাংশের। বিশেষ করে শীতকালে যখন অধিকাংশ যাত্রী কম্বল ব্যবহার করেন, তখন এই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব অনেক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা এবং রেলের প্রাক্তন আধিকারিকরা ভারতীয় রেলকে উলের কম্বল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছেন। এনএইচএম বিভাগের এক অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র অফিসারের পরামর্শ, “কম্বলগুলি খুব ভারী হয়। সেগুলি সঠিকভাবে ধোয়া একটি চ্যালেঞ্জ। রেল কর্তৃপক্ষের পরিবর্তে হালকা, সহজে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় এমন বিকল্প কিছু ব্যবহার করা উচিত।"

Indian Railway: ট্রেনের এসি কোচের কম্বল ধোয়া হয় মাসে মাত্র ১-২ বার? প্রকাশ্যে RTI-এর চাঞ্চল্যকর তথ্য
Kolkata: কলকাতায় রয়েছে একাধিক মিউজিয়াম, একদিনের ছুটিতে দেখে আসুন ইতিহাসে মোড়া জায়গাগুলি

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in