রামমন্দির তৈরি সত্ত্বেও ফৈজাবাদে জিততে পারেনি বিজেপি। এই হারের জন্য প্রশাসনের দিকেই আঙুল তুলেছিলেন অযোধ্যার হনুমানগড়ির প্রধান পুরোহিত মোহান্ত রাজু দাস। এরপরই তুলে নেওয়া হল তাঁর নিরাপত্তারক্ষী। রাজু দাসের দাবি, প্রশাসনের দিকে আঙুল তোলাতেই তাঁর নিরাপত্তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রশাসনের দাবি ওই পুরোহিতের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল, তাই নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনা নিয়ে সরগরম অযোধ্যা রাজনীতি।
গত শুক্রবার ফৈজাবাদে বিজেপির হার নিয়ে পর্যালোচনা করতে একটি দলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী সূর্যপ্রতাপ শাহি এবং জয়বীর সিংহ। জানা যায়, নিমন্ত্রিত না থাকা সত্ত্বেও সেখানে হাজির হন মোহান্ত রাজু দাস। এরপর বৈঠক চলাকালীন জেলাশাসক নীতিশ কুমারের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন রাজু দাস।
রাজু দাস বলেন, ফৈজাবাদে হারের জন্য শুধু বিজেপি কর্মীদের দায়ী করলে চলবে না। নেপথ্যে জেলাশাসকেরও দোষ রয়েছে। তাঁর দাবি, জেলাশাসক অযোধ্যার লোকজনকে নোটিস পাঠিয়ে জমি খালি করতে বলেছেন। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যই সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা-ও আবার ভোটের আগে। সে কারণে ক্ষুব্ধ জনগণ। তাই হারতে হয়েছে বিজেপিকে।
রাজু দাসের দাবি, এরপরেই তাঁর নিরাপত্তারক্ষীকে সরিয়ে দেয় প্রশাসন। একটি সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, “শুক্রবার রাত ১১টার সময় বৈঠকে বসেছিলাম। জেলাশাসকের সঙ্গে বিবাদ হয় আমার। এরপর তিনি এসপিকে সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে যান। দু’মিনিট পর ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি আমার নিরাপত্তারক্ষী নেই। আমাকে জানানো হয়েছে, নিরাপত্তারক্ষী তুলে নেওয়া হয়েছে।“
যদিও মোহান্তের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন জেলাশাসক নীতিশ কুমার। তিনি একটি সংবাদমাধ্যমে জানান, ‘‘২০১৩, ২০১৭, ২০২৩ সালে রাজু দাসের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছিল। সেটা জানার পরই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে তিন জন সশস্ত্র পুলিশকর্মীকে সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল।“
তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজু দাস জানিয়েছিলেন প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে তাঁর। তাই নিরাপত্তারক্ষী চেয়ে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমরা অভিযোগ পেয়েছি যে, ওই পুলিশকর্মীদের দিয়ে রাজু দাস লোকজনকে ভয় দেখাচ্ছেন। প্রশাসন এবং অযোধ্যাবাসীর বিরুদ্ধে কুকথাও বলেছেন তিনি।“
এই ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী সূর্যপ্রতাপ শাহি একটি সংবাদ মাধ্যমে জানান, ‘‘লোকসভা নির্বাচন এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে বৈঠক ছিল। সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে ভোটের পর্যালোচনা চলছিল। প্রশাসনের পাঁচ আধিকারিকের সঙ্গে অন্য একটি বৈঠক চলছিল। মোহান্ত সেখানে আমন্ত্রিত না থাকলেও উপস্থিত হন।“
এই ঘটনার পর শনিবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে দেখা করেন মোহান্ত রাজু দাস। সংবাদ মাধ্যমে এই বিষয়ে তিনি জানান, “আমি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি অযোধ্যার সরকারি কর্মকর্তারা দুর্নীতিগ্রস্ত এবং তাঁরা ঘুষ ছাড়া কোনও কাজ করেন না।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন