সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের (Surgical Strike) প্রমাণ চেয়ে যে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং (Digvijaya Singh), তার সঙ্গে দলের ভাবনা মেলে না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।
মঙ্গলবার, জম্মু-কাশ্মীরে ভারত জোড়ো যাত্রার (Bharat Jodo Yatra) মাঝে কংগ্রেসের (Congress) প্রাক্তন সভাপতি বলেন, 'দিগ্বিজয় সিংয়ের ব্যক্তিগত মতের সঙ্গে আমরা সহমত নই। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি দলের সঙ্গে মেলে না। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, সশস্ত্র বাহিনী তাদের কাজ খুবই ভালো ভাবে করে এবং এজন্য তাদের কোনও প্রমাণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
রাহুল গান্ধী আরও বলেন, 'সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট। আমাদের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'
গত সোমবার, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। তিনি বলেন, 'ওরা (মোদী সরকার) সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের বিষয়ে কথা বলে। (দাবি করে যে) আমরা এত লোক (জঙ্গি) মেরেছি। কিন্তু কোনও প্রমাণ নেই। স্রেফ মিথ্যার আশ্রয়ে এরা (বিজেপি) রাজত্ব করছে। আপনাদের বলতে চাই যে এই দেশ সকলের।'
এরপর, পুলওয়ামা হামলা নিয়েও কেন্দ্রকে নিশানা করেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। তিনি বলেন, 'পুলওয়ামায় আমাদের ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহীদ হয়েছেন। সিআরপিএফ আধিকারিকরা সমস্ত সৈন্যকে এয়ারলিফ্ট করার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজি হননি। এমন ভুল হল কীভাবে? তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত পুলওয়ামা নিয়ে সংসদে কোনো রিপোর্ট পেশ করা হয়নি।'
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে দিগ্বিজয়ের প্রমাণ চাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে আসরে নামে বিজেপি। কংগ্রেসকে 'দেশবিরোধী' বলে তোপ দাগার পাশাপাশি, রাহুল গান্ধীকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও জানায় নরেন্দ্র মোদীর দল।
বিজেপি মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া (BJP spokesperson Gaurav Bhatia) বলেন, 'দায়িত্বহীন বিবৃতি দেওয়া কংগ্রেসের একটি অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু, তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বললে তা সহ্য করা হবে না। মনে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর প্রতি তাদের ঘৃণার কারণে অন্ধ হয়ে গেছেন রাহুল গান্ধী এবং দিগ্বিজয় সিং।'
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ১৮ জন জওয়ান। সেই ঘটনার পর ভারতীয় সেনার তরফে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালানো হয়।
এছাড়া, ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় ৪০ জন জওয়ান নিহত হন। যে ঘটনায় দায়ী করা হয় পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদকে। পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের বালাকোটে জইশের তিনটি ট্রেনিং ক্যাম্পে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জইশের ট্রেনিং ক্যাম্প।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন