৩ দিনের ভারত সফরে এসে দেশে ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে মোদী সরকারের সমালোচনা করলেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস (Antonio Guterres)।
মঙ্গলবার গভীররাতে মুম্বাইয়ে পা রাখেন গুতেরেস। বুধবার, মুম্বইয়ের আইআইটিতে 'India @75: UN-India Partnership: Strengthening South-South Cooperation' শীর্ষক বিষয়ে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব। এই মঞ্চে থেকেই ভারতে মানবাধিকার নিয়ে সরব হন তিনি।
আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গুতেরেস বলেন, ‘মানবাধিকার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য হিসাবে ভারতের একটি দায়িত্ব রয়েছে। বিশ্ব মানবাধিকারকে নতুন রূপ দিতে, এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সকল ব্যক্তির অধিকার রক্ষার জন্য ভারতের একটি দায়িত্ব আছে।’
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় ফেরার পর ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন এবং ঘৃণামূলক বক্তব্য বেড়েছে। সরকারের সমালোচক এবং সাংবাদিকদের প্রতি আক্রমণও বেড়েছে।
মহিলা সাংবাদিকদের উপরেও অত্যাচার নেমে এসেছে। কাউকে মেরে ফেলা হয়েছে, আবার কেউ পেয়েছেন ধর্ষণের হুমকি। বিরোধীদের এই অভিযোগের মাঝে মানবাধিকার নিয়ে গুতেরেসের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, অভিমত বিশেষজ্ঞ মহলের।
যদিও ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তির ৭৫ বছর পর ভারতের অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব। গুতেরেস বলেন, 'বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধি ঘটেছে। তবে এটি ধরে রাখতে বোঝাপড়া দরকার। অবশ্যই এটি প্রতিদিন লালন-পালন, শক্তিশালী এবং পুনর্নবীকরণ করতে হবে। এবং তা উচিতও।'
মহাত্মা গান্ধী ও জওহরলাল নেহেরুর অবদানের কথা উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, 'বিদ্বেষমূলক বক্তব্যকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিন্দা করতে হবে। এবং এঁদের মূল্যবোধকে রক্ষা করতে হবে।'
তিনি বলেন, 'সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র এবং শিক্ষাবিদদের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে ভারতকে। ভারতের বিচার বিভাগের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করতে হবে।'
গুতেরেসের মতে, 'দেশের অভ্যন্তরে মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তা রক্ষার মাধ্যেমে ভারত বিশ্বের দরবারে নিজেদের কর্তৃত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে।'
লিঙ্গ সমতা এবং মহিলাদের অধিকারকে এগিয়ে নিতে আরও অনেক কিছু করা দরকার ভারতের বলে মনে করেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন