Labour Codes: নয়া 'শ্রম কোড' চুক্তিভিত্তিক কাজের পথকে প্রশস্ত করবে - ক্ষুব্ধ শ্রমিক সংগঠনগুলি

নয়া শ্রম কোডে - সপ্তাহে ৪ দিন কাজ এবং ৩ দিন ছুটির বিধান রাখা হয়েছে। আর কাজের সময় প্রতিদিন ৮ ঘন্টার পরিবর্তে ১২ ঘন্টা করা হয়েছে। এই কাজের সময়সীমা পরিবর্তন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি।
AITUC সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কৌর
AITUC সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কৌরগ্রাফিক্স - সুমিত্রা নন্দন
Published on

১ জুলাই থেকে সারা দেশে নতুন 'শ্রম কোড' চালুর কথা ছিল কেন্দ্রের। কিন্ত 'চূড়ান্ত আলোচনা' না হওয়ায় তা চালু করতে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকার।

এখনও বেশ কিছু রাজ্য এবং শ্রমিক সংগঠনগুলি কেন্দ্রের প্রস্তাবিত 'নয়া শ্রম কোড' চালু নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাই, আলোচনা ছাড়াই জোরপূর্বক 'কৃষি আইন চালু' করতে গিয়ে আন্দোলনের চাপে যেভাবে তা প্রত্যাহার করতে হয়েছে কেন্দ্রকে, সেই ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি চাইছে না মোদী সরকার।

তাই, দেশজুড়ে 'নয়া শ্রম কোড' চালুর আগে 'ঐক্যমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা' করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব।

কিন্তু, দেশের ৪৪টি শ্রম আইন তুলে দিয়ে কেন্দ্র যেভাবে মাত্র চারটি কোডে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। চারটি শ্রম কোডের মধ্যে রয়েছে - (১) মজুরি (২) সামাজিক নিরাপত্তা (৩) শিল্প সম্পর্ক এবং (৪) পেশাগত নিরাপত্তা সংক্রান্ত।

এর মধ্যে মজুরি এবং সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোড নিয়ে সম্মতি জানিয়েছে বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তবে বাকি দুটি কোড - শিল্প সম্পর্ক এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলির। তাঁরা কেন্দ্রকে বিষয়টি পর্যালোচনা করার কথা জানিয়েছে।

AITUC সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কৌর (Amarjeet Kaur) স্পষ্ট জানিয়েছেন, 'শ্রম আইনের যে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা শ্রমিকদের স্বার্থের পরিপন্থী। নয়া কোড শুধু ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সমস্যা তৈরি করবে তা নয়, এটি শ্রমিকদের মজুরিতেও কোপ ফেলবে। এখানে কন্ট্রাক্ট লেবার বা চুক্তিভিত্তিক কাজের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। গ্র্যাচুইটি, বোনাসসহ একাধিক প্রাপ্য থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে চাইছে সরকার।'

নয়া শ্রম কোডে - সপ্তাহে ৪ দিন কাজ এবং ৩ দিন ছুটির বিধান রাখা হয়েছে। আর কাজের সময় প্রতিদিন ৮ ঘন্টার পরিবর্তে ১২ ঘন্টা করা হয়েছে। এই কাজের সময়সীমা পরিবর্তন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অমরজিৎ কৌর।

পাশাপাশি কোনও প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিতে ৩০০ বেশি শ্রমিক বা কর্মী ছাঁটাই করতে গেলে প্রশাসনিক অনুমতি প্রয়োজন। তবে, ৩০০ সংখ্যার কম হলে সেখানে ছাঁটাই করার জন্য কোনও অনুমতির প্রয়োজন হবে না। সেই নিয়েও আপত্তির কথা জানিয়েছেন AITUC সাধারণ সম্পাদক।

জানা যাচ্ছে, দেশে বর্তমানে ৮০ শতাংশ শিল্পে শ্রমিক বা কর্মীর সংখ্যা ৩০০ জনের কম। ফলে এই শ্রম কোডের মাধ্যমে, বেশিরভাগ শিল্পে অবাধ শ্রমিক বা কর্মী ছাঁটাইয়ের পথ খোলা রাখা হয়েছে বলে মনে করছেন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।

বিভিন্ন ইস্যুতে দাবি আদায়ের জন্য শ্রমিকরা সম্মিলিতভাবে কোম্পানির সঙ্গে দর কষাকষির সুযোগ পেতেন। নয়া শ্রম কোডে শ্রমিক সেই ক্ষমতাকে খর্ব করা হয়েছে। এই বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন AITUC সাধারণ সম্পাদক কৌর।

তিনি জানান, নয়া শ্রম কোডে - ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করা আরও কঠিন হবে। ইউনিয়ন গঠিত হলেও, তাদের স্বীকৃতিতে দিতে বাধা দেওয়া হবে। ফলে, বিপুল সংখ্যক শ্রমিক সমস্যায় পড়লে, সংগঠনের মাধ্যমে আইনি প্রতিকার নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। কৃষি আইনের মতো, এই কোডগুলিও অবাঞ্ছিত। এই কোড চালু হলে, শ্রমিকদের ধর্মঘটের অধিকার প্রায় শেষ হয়ে যাবে।'

CITU-এর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, 'এই কোডগুলি শ্রমিকদের চেয়ে নিয়োগকর্তা এবং কর্পোরেটদের বেশি উপকৃত করবে৷ ট্রেড ইউনিয়নগুলি কোডের বিরোধিতা করছে এবং মার্চ মাসে দুই দিনের ধর্মঘটের ডাকও দিয়েছিল।' এই বিরোধিতা জারি থাকবে জানান তিনি।

AICCTU-এর সাধারণ সম্পাদক রাজীব দিমরি (Rajiv Dimri) কেন্দ্রের নয়া শ্রম কোডগুলিকে 'দাসত্বের কোড' হিসাবে অবিহিত করেছেন। তাঁর মতে, 'শ্রমিকদের অধিকার এবং শ্রম আইনগুলিকে নয়া কোডে সরল করা বলে বোঝানো হচ্ছে। আসলে এগুলি মূলত 'ব্যবসা করার সহজ' পথ হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে।

AITUC সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কৌর
Bihar: কেন্দ্রের মোদী সরকার প্রতি মাসে ১.৩ কোটি মানুষের রোজগার ছিনিয়ে নিচ্ছে - তেজস্বী যাদব

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in