অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সব্যসাচী দাসকে সমর্থন জানিয়ে ইস্তফা দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগেরই আর এক অধ্যাপক। সহকর্মী অধ্যাপকের পদত্যাগের পর তাঁর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে যাওয়া বিবেকবিরুদ্ধ কাজ হবে জানিয়েই পদত্যাগ করেন পুলাপ্রে বালাকৃষ্ণাণ। পদত্যাগপত্রের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২ পাতার একটি চিঠিও লেখেন তিনি।
কয়েকদিন আগেই অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সব্যসাচী দাসের গবেষণাপত্র ‘ডেমোক্র্যাটিক ব্যাকস্লাইডিং ইন দ্য ওয়ার্ল্ডস লার্জেস্ট ডেমোক্রেসি’ নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা দেশের রাজনৈতিক মহলে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনা ও বিজেপির একচেটিয়া জয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা ওই গবেষণাপত্র বিজেপির মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত এই বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করতে হয় ওই অধ্যাপককে।
সব্যসাচী দাসকে চাপ দিয়ে পদত্যাগ করানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তাঁর সহকর্মী অধ্যাপকরা। দেশ জুড়ে ৮১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮৮ জন অর্থনীতিবিদ সব্যসাচী দাসের পাশে দাঁড়িয়ে একটি যৌথ বিবৃতিও দিয়েছেন।
এবার সহকর্মীর সঙ্গে হওয়া ‘কূটনীতি’র কড়া নিন্দা করে পদত্যাগ করলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগেরই আরও এক অধ্যাপক বালাকৃষ্ণাণ। শনিবার তিনি পদত্যাগের কারণ জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রুদ্রাংশু মুখার্জী এবং ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন প্রমথরাজ সিনহাকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, “আমি বিশ্বাস করি অধ্যাপক দাসের গবেষণাপত্র নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে, সেখানে ওই গবেষণাপত্র বোঝার ক্ষেত্রে বড়সড় ত্রুটি রয়েছে। ওইরকম প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে গবেষণার স্বাধীনতা লঙ্ঘন হয়েছে। আর আমার সহকর্মী চলে যাওয়ার পর আমার থেকে যাওয়াটা আমার নিজেরই বিবেকবিরুদ্ধ হবে।”
পাশাপাশি, ওই চিঠিতে পদত্যাগী অধ্যাপক সব্যসাচী দাসকে পুনরায় তাঁর পদে নিয়োগ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবিও জানিয়েছে বালাকৃষ্ণাণ। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে পূর্ণসময়ের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন বালাকৃষ্ণাণ। তবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার আগে তার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউট, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট এবং বিশ্ব ব্যাঙ্কে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন