ভগবানের থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়ে উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরের সুন্দরধুঙ্গ নদী উপত্যকায় পাহাড়ের কোলে হ্রদের পাশে আশ্রম গড়েছেন এক স্বঘোষিত ধর্মগুরু। স্থানীয়দের অভিযোগ, হিমবাহের জল থেকে তৈরি ওই পবিত্র কুণ্ডে নেমে প্রায়শই সাঁতার কাটতে দেখা যায় স্বঘোষিত বাবাকে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাবা চৈতন্য আকাশ তথা আদিত্য কৈলাশ স্থানীয় কিছু লোককে বুঝিয়েছিলেন, এই আশ্রম নির্মাণের জন্য স্বপ্নে তিনি ঐশ্বরিক আদেশ পেয়েছেন। এবং বাবার সেই কথা অনেকেই বিশ্বাস করে তাঁকে আশ্রম গড়তে সহায়তা করেন।
বাগেশ্বর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনুরাধা পাল এবিষয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে এই বিষয়ে একটি আবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্তের জন্য পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, যেখানে মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে সেখানে যাওয়ার রাস্তাটি কঠিন ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে যায় এবং বর্ষাকালে বন্ধ থাকে।
এবিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) অক্ষয় প্রহ্লাদ কোন্ডে জানিয়েছেন, সরকারের জমির উপর বেআইনি ভাবে এই আশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। স্ব-ঘোষিত ধর্মগুরু গত ১০-১২ দিন ধরে ওই আশ্রমে বসবাস করছেন এবং পবিত্র হ্রদ দেবী কুন্ডে স্নান করছেন। যার ফলে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। গ্রামবাসীরা ওই হ্রদটিকে সম্মান করে।
এসপি কোন্ডে আরও জানিয়েছেন, “পুলিশ আইনশৃঙ্খলার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি পরীক্ষা করছে। কিন্তু যেহেতু জায়গাটি পরিবেশগত দিক থেকে অত্যন্ত সংবেদনশীল, তাই বন বিভাগকে জানানো হয়েছে বিষয়টি।“
এসপি আরও জানিয়েছেন, ওই জায়গায় পৌঁছানো কঠিন। সুন্দরধুঙ্গা নদী উপত্যকার শেষ দুটি গ্রাম ওয়াঞ্চাম এবং জাতোলি থেকে পৌঁছাতে আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে।
এর পাশাপাশি ওই বাবার বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই বাবা বারংবার তাঁর নাম পরিবর্তন করেন। কোন্ডে জানিয়েছেন, "তিনি নিজেকে কখনও চৈতন্য আকাশ আবার কখনও আদিত্য কৈলাশ বলে ডাকেন। দুটি নামের মধ্যে কোনটি তার আসল নাম তা বলা কঠিন।“
আরও জানা গেছে, রাজনীতিবিদদের সঙ্গেও দেখা করেছেন ওই ধর্মগুরু। পুলিশের সন্দেহ, দ্বারহাট এবং হরিদ্বারে আশ্রয় যাওয়ার পর তিনি সুন্দরধুঙ্গা নদী উপত্যকায় আশ্রয় নিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন