আসামের মরিগাঁও জেলার মানিক দাস, ৬০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি সম্প্রতি আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ “বাংলাদেশী” হিসাবে অপবাদের কারণে হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেনস (এনআরসি) তে নাম থাকা সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে মরিগাঁওয়ের ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে’ নিজেকে ভারতীয় প্রমাণের জন্য একটি মামলা লড়ছিলেন। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে তাঁকে ‘বিদেশি’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল।
মানিক দাসের নাবালিকা কন্যার অভিযোগ, “অনেক বছর ধরে মামলা চলছে। পুলিশ কেন বাবাকে নোটিশ পাঠিয়ে মামলা করেছে তা আমরা জানি না। এনআরসিতে আমার বাবার নাম এসেছে। পুরো প্রক্রিয়াটির কারণে তিনি হতাশ হয়েছিলেন এবং মানসিক নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছিলেন।” মানিক দাসের কাছে তাঁর নামে প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং জমির রেকর্ডের মতো সমস্ত বৈধ বৈধ পরিচয়পত্র রয়েছে বলেও পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মানিক দাস রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিল এবং মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার বাড়ির পাশের একটি টিলায় একটি গাছে ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন - “দেহটি পোস্টমর্টেমের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে আমরা পোস্টমর্টেম করার পরেই নিশ্চিতভাবে বলতে পারব।
মরিগাঁওয়ের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (সীমান্ত) ডি আর বোরা অবশ্য বলেছেন, পারিবারিক সমস্যা দাসকে চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে পারে। তাঁর কথায় – “ ফরেন ট্রাইবুনালের মামলার সাথে আত্মহত্যাকে যুক্ত করা সম্পূর্ণ ভুল। আত্মহত্যার কারণ পারিবারিক সমস্যা হতে পারে।”
মৃত মানিক দাসের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। পুলিশের দাবি মানিক দাসকে শুধুমাত্র একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। গুয়াহাটি হাইকোর্টের নির্দেশিকা অনুসারে তার পরিবারের কোনও সদস্যের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করা হয়নি।
যদিও মৃত মানিক দাসের আইনজীবী দীপক বিশ্বাস বলেন – “মিঃ দাসের কাছে সমস্ত বৈধ বৈধ পরিচয়পত্র যেমন প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং জমির রেকর্ড ছিল। আমরা ট্রাইব্যুনালে আমাদের উত্তর জমা দিয়েছিলাম এবং উনি যে একজন ভারতীয় তা প্রমাণ করতে পারতাম আমরা।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন